বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার শহরতলীর শ্রীমঙ্গল সড়কের ইসলামবাগ এলাকায় পরিকল্পিত ভাবে চুরি ও অগ্নি সংযোগ ঘটনায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসময় দূর্বৃত্তরা ১০ ভরি স্বর্ন আলংকার নিযে যাওয়াসহ বাসায় থাকা মুল্যবান জিনিসপত্র তছনছ করার অভিযোগ রয়েছে। গত ১৬ মার্চ রাত ১২ টায় বাসার ৩ তলা ভবনের ২ তলায় পাকঘরের জানালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে এ চুরি ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং এস এম গ্রুপের চেয়ারম্যান মরহুম সৈয়দ মফচ্ছিল আলী ও বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের একজন এডভোকেট ব্যারিস্টার সৈয়দ রাজি নাসিফ এর বাসায় বেন্টিলেটর ভেঙ্গে প্রবেশ করে। আলমারীর ড্রয়ার ভেঙ্গে বিভিন্ন ধরণের ১০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে ঘরে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা । বিল্ডিং এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভাড়াটিয়াদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ দিলে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সদর থানার পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ঘটনার রহস্য উৎঘাটনে একটি মামলা হলে পুলিশ একজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেছে বলে পুলিশ জানায়। পুলিশ আরো জানায় বিষয়টি রহস্যজনক হলেও মুল রহস্য উৎঘাটনে পুলিশের তদন্ত ও চেষ্ট চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, এঘটনার সময় নিচতলা ও ৩য় তলার থাকা বাড়াটিয়া তাৎক্ষনিক আগুনের খবর জানালে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসায় বড় ধরনের দূর্ঘটনা হতে রক্ষা পাওয়া গেছে। শহরের গুরুত্বপুর্ন এই বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে এমন অগ্নি কান্ডের আলামত সন্হেজনক। বাসার মালিক ব্যরিস্টার সৈয়দ নাসিফ মফচ্ছিল ও পরিবার ঢাকায় বসবাস করায় অগ্নিকান্ডের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছেন।

ব্যারিস্টার সৈয়দ রাজী নাসিফ বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ল চেম্বার “দ্যা লিগ্যাল সার্কেলে” কর্মরত আছেন। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত সাবেক আওয়ামীলগ নেতা সৈয়দ মফচ্ছিল আলীর পুত্র ব্যারিস্টার সৈয়দ রাজি নাসিফ জানান, আমার পরিবার নিয়ে আমি ঢাকায় দীর্ঘ দিন থেকে বসবাস করছি। মৌলভীবাজারের আমাদের ব্যবসা বানিজ্য রয়েছে। আমার বাবার মৃত্যু পর আমাকেই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আমাকে প্রায়শই আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। বাসায় কেয়ার টেকার ও প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্টানে কর্মচারী রয়েছে।

ঘটনার রাতে নিচতলা ও ৩য় তলার বাড়াটিয়া ও স্থানীয় লোকজন আমাকে খবর দেয়। আমি স্থানীয় মডেল খানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তাদের সহযোগিতায় সর্বাত্নক চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। মুহূর্তের মধ্যেই ২য় তলার সবকটি কক্ষের ফার্নিচার, টিভি, ফ্রিজ, এসি, টাইলসহ বিভিন্ন আসবাসপত্র ও গুরুত্বপূর্ন দলিলপত্র আগুনে পুড়িয়া ছাই হয়ে যায়। আগুনে বিল্ডিং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক ৪০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

অগ্নিকান্ডের ঘটনায় জিবান (৩৫) নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত জিবান ইতিপূর্বে এই বাড়ীর বিভিন্ন কাজ কর্ম করে আসছিল। তার বিভিন্ন কাজে সন্দেহ হইলে মালিক বাড়ী হতে তাকে বের করে দেন। বাড়ীর বিভিন্ন কাজ কর্ম করায় বাড়ীর বিভিন্ন বিষয়ে অবগত ছিল সে। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কারো প্ররোচনায় অগ্নিকান্ড ও চুরি ঘটনা ঘটিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে বলে বাড়ির মালিকের ধারনা। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন উপ সহকারী পরিচালক মো: আলাউদ্দিন এর ০১৭৩০-০০৯০৭৮ নাম্বারে এ অগ্নিকান্ডের বিষয় জানার জন্য মোঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেননি।

এঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মুখলেছুর রহমান লস্কর এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান- মামলার তদন্তভার গ্রহন করিয়া সঙ্গীয় ফোর্স সহ বিগত ২৩ মার্চ ০১.৩০ ঘটিকার সময় মৌলভীবাজার সদর মডেল থানাধীন পৌরসভা বেরির পাড় পয়েন্ট এলাকা হইতে জিবান হোসেন নামে একজনকে গ্রেফতার করি । প্রাথমিক তদন্তে ধৃত সন্দিগ্ধ আসামী জিবান হোসেন ঘটনার সহিত জড়িত আছে মর্মে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। মামলাটি তদন্ত চলছে। আটক আসামী জিবানকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।

এবিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল মডেল থানার অফিসার এনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন- অগিন্কান্ডের ঘটনায় ব্যারিস্টার সৈয়দ রাজি নাসিফ এর দায়েরী একটি অভিযোগে জিবান (৩৫), পিতা- আবুল মিয়াকে আটক করা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষনিক ঘটনা কারন উৎঘটনের চেষ্টা করছি। আশা করি যে বা যারাই অগ্নি কান্ড ঘটিয়েছে বের হয়ে আসবে।