শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা: জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থান চলাকালে আহতদের পঙ্গু হাসপাতালে দেখতে গিয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক মামলার শুনানি শেষে প্রেস বিফ্রিয়ে এ কথা জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আহতদের দেখতে আমরা যখন পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলাম, সেখানকার রোগী ও ডাক্তাররা আমাদের জানিয়েছেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে প্রথম যখন হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসেছিলেন, তখন তিনি বলে গিয়েছিলেন— নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ। অর্থাৎ কোনো চিকিৎসা দেবেন না এবং কাউকে ছাড়পত্রও দেবেন না, যাতে কেউ বাইরেও যেতে না পারে। ’
অভ্যুত্থানে চানখারপুলে সংঘঠিত গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তিন অভিযুক্তকে এ দিন রিমান্ডে পাঠান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, বিএম সুলতান মাহমুদ, শহিদুল ইসলাম সরদার ও গাজী এম এইচ তামিম।
মামলায় শাহবাগ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-অপারেশন) আরশাদ হোসেন ও কনস্টেবল ইমাজ হোসেন প্রামাণিক ও সুজন হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজকের শুনানিতে প্রসিকিউশন পক্ষ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য দুই মাস সময় চাইলে আদালত আগামী ২২ এপ্রিল নতুন দিন ধার্য করেন। এছাড়া অভিযুক্ত আরশাদ হোসেন ও ইমাজ হোসেন প্রামাণিককে যথাক্রমে ২ মার্চ ও ৩ মার্চ একদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আজকে যে তিন পুলিশকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল তার মধ্যে শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) আরশাদ হোসেন অসম্ভব রকমের অ্যাগ্রিসিভ একজন অফিসার ছিলেন। আন্দোলনের সময় ছাত্রদের মুখ চেপে ধরার যে ছবি সেটি তার ছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সময় চাইলে আদালত একদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন৷
তিনি বলেন, অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত সংস্থা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আরও তথ্য-প্রমাণাদি পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্টের সময় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের কোনো প্রকার সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়নি প্রশাসনের চাপে। পাশাপাশি সে সময় তারা যে গুলি খেয়ে মারা গেছেন, সে বিষয়টিও ডেথ সার্টিফিকেটে লিখতে দেওয়া হয়নি। তাদের যে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট (ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন) নেই, এটিও একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ।
ছাদের কার্নিশে গুলি, এসআই চঞ্চল একদিনের রিমান্ডে এদিকে, আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাড়ির ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা অবস্থায় এক কিশোরকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পুলিশের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল কুমার সরকারকেও একদিনের রিমান্ডে পাঠান ট্রাইব্যুনাল।