সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৫ অপরাহ্ন
রাজনগর প্রতিনিধি: ঈদের আনন্দের দিনে নতুন আনন্দ যোগ হয়েছিল লিমা আক্তারের (২১)। এদিনই জন্ম দিয়েছিলেন একটি কন্যা শিশুর।কিন্তু দূর্ভাগ্য নেমে এলো নবজাতকের জীবনে। জন্মের পরপরই মায়ের বুকের দুধ পানের আগেই এ হাসপাতাল ও হাসপাতাল ঘুরে করোনা আক্রান্ত (কোভিড-১৯) হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন নবজাতকের মা লিমা আক্তার।
নিমিশেই শেষ হয়ে গেল পরিবারের আনন্দ। করোনার থাবায় অথৈ সাগরে ভেসে গেলে একটি শিশুর ভবিষ্যৎ।মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টায় সিলেটের নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিমা আক্তারের মৃত্যু হয়। পরে উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের ডেফলউড়া গ্রামে রাত সাড়ে ৩ টায় জানাযা শেষে ইকরামুল মুসলিমিন মৌলভীবাজার মৃতের লাশ দাফন করে।তিনি রাজনগরের টেংরা ইউনিয়নের ডেফলউড়া গ্রামের জাহাঙ্গির মিয়ার স্ত্রী। তার ৫ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।মঙ্গলবার দুপুরে মৃত লিমা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নবজাতক শিশুটিকে বিছানায় শুইয়ে ফিডার খাওয়াচ্ছেন তার এক ফুফু। শিশুটির দাদা লকুছ মিয়া ছিলেন পাশে।
তিনি বলেন, সন্তান সম্ভবা লিমা আক্তারকে ঈদের আগে মৌলভীবাজারের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করান। এসময় তার করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে গাইনি ডাক্তার করোনা টেস্ট করানোর জন্য বলেন এবং সেখান থেকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে রেফার্ড করেন। নমুনা দেয়ার তিনদিন পর লিমা আক্তারের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। সেখানের ডাক্তাররা তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে সিলেট রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে নিয়ে গিয়ে সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন লিমা আক্তার। সন্তান জন্ম দেয়ার পর তার অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকে। প্রয়োজন হয় আইসিইউর। সেখান থেকে সিলেট মা ও শিশু হাসপাতাল ও পরে মঙ্গলবার দিনে নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
তিনি আরোও বলেন, নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ঢুকানোর পর আস্তে আস্তে তার অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকে। অবশেষে রাত ৯টার দিকে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। রাতেই লিমা আক্তারের লাশ বাড়িতে নিয়ে নিয়ে আসা হয়। পরে ইকরামুল মুসলিমিন মৌলভীবাজার রাত সাড়ে তিনটার সময় লাশ দাফন করে।লিমা আক্তারের শ্বশুর লকুস মিয়া অভিযোগ করে বলেন, মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চাইলে চিকিৎসা করতে পারতো। সেখানে নার্স-ডাক্তাররা এসে ঠিকমতো দেখেও না। নার্সদের তো আনাই যায়না। শিশুটির দাদি সালমা বেগম বলেন, আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। মা ছাড়া সাত দিনের শিশুটিকে কীভাবে লালন পালন করবো?