রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০২:২১ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার শহরের বেরি লেকটির উত্তর-পূর্ব দিকে পানির মধ্যে আবর্জনা ভাসছে। সরজমিনে দেখা যায় লেকের চারিদিকে বাসা-বাড়ির লোকজন ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করছেন। আর এসব ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পানি নোংরা ও ভরাট হয়ে সৌন্দর্য হারাচ্ছে মৌলভীবাজার পৌর শহরের শাহ মোস্তফা (র.) সড়কের বেরি লেক। লেকের পাশে পৌরসভা কর্তৃক লীজ দিয়ে দেয়ায় ছাগলের হাট ও ট্রাকস্ট্যান্ডের কারণে জলাধারটি মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সরজমিনে হেলে দেখা যায় তারই বাস্তব চিত্র। লেকের সঙ্গে এক সময় শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা মনু নদীর সংযোগ ছিল। ভূমিকম্পের প্রভাবে লেকটি নদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য ১৫একর আয়তনের লেকটি ভরসা।
বেরিরচর এলাকার পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাও এখন লেকের সঙ্গে সংযুক্ত। ফলে এলাকার নোংরা ও আবর্জনাযুক্ত পানিও এখানে আসে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বর্জ্য-আবর্জনা লেকে ফেলছে মানুষ। তবে লেকের চারদিকে চলছে অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ। খোঁড়াখুঁড়ির মাটি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে লেকে যাচ্ছে। এভাবে লেকটি ভরাট হচ্ছে।
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, লেকের উত্তর-পূর্ব দিকে পানির মধ্যে আবর্জনা ভাসছে। লেকের শাহ মোস্তফা সড়কের কাছেই ট্রাকস্ট্যান্ড। সেখানে কাপড় ও ট্রাক ধোয়ামোছা করছেন লোকজন। গাড়ির নোংরা পানি পড়ছে জলাধারে। পাশাপাশি লেকের দুই পাশে বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে। এসব আবর্জনার মধ্যে আছে চিপস ও চানাচুরের প্যাকেট,গৃহস্থালির নানা বর্জ্য,ডাবের খোসা ও পলিথিন।
এখন লেকের দক্ষিণ পাশে সোম ও বৃহস্পতিবার ছাগলের হাট বসে। হাটের বর্জ্য ও ছাগলের মলমূত্র লেকের পানিতে পড়ে। বেরিচরের দক্ষিণ পাড়ে শাহ মোস্তফা সড়ক এলাকায় বছর কয়েক আগেও প্রচুর গাছপালা ছিল। তখন পাড়টি সংরক্ষিত ছিল। কয়েক বছরে আগে জলাধারের পাশে শাহ মোস্তফা সড়ক সম্প্রসারণের সময় অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আ স ম সালেহ সুহেল দৈনিক মৌমাছি কন্ঠকে বলেন, আইনি ব্যবস্থা নিয়ে অবিলম্বে জলাধার দখলমুক্ত করতে হবে। তবেই আগের অবস্থা ফিরে পাবে জলাধার।
শহরের বাসিন্দা ফয়ছল, কামরান, আশফাক, মারুফসহ আরো অনেকে বলেন, শহরের সব ময়লা ফেলে লেকটি ভরাট করা হয়েছে। তারপর ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে জলাধারের পাশে অবৈধ বাড়িঘর গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে চমৎকার এ লেকটি উপভোগ থেকে একদিন বঞ্চিত হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে এগ্রিয়ে আসা প্রয়োজন।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, শহরের এ লেকটি হাতিরঝিলের আদলে জলাধারটি রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা। আমাদের পাঠানো আবেদন গ্রহণ করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা সম্বব হবে।