শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৩ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: শীত প্রধান হাওর বাওর এবং চা সীমান্তঘেষা চা অঞ্চলে শীতের আগমন টের পাওয়া যাচ্ছে কয়েকদিন ধরেই। সন্ধ্যা নামতেই কমে যাচ্ছে তাপমাত্রা। দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোরে চাদর বিছিয়ে দিচ্ছে কুয়াশা। শীত এখনো জেঁকে না বসলেও তাকে স্বাগত জানাতে গরম কাপড় কিনছেন লোকজন। মৌলভীবাজারসহ সারা দেশে ফুটপাত ও বড় বড় শপিংমলগুলোতে শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসছেন দোকানিরা। বেচাকেনাও জমে উঠেছে।
এদিকে, দিন যত গড়াচ্ছে শীতবস্ত্রের বিক্রি ও দাম বাড়ছে। দামও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নিম্নবিত্ত মানুষদের পক্ষে শীতের পোশাক কেনা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিত্তবানরা অভিজাত শপিংমল ও বিপণিবিতানে ছুটলেও মধ্যবিত্তের অনেকেই ফুটপাতের দোকানগুলোর দ্বারস্থ হচ্ছেন।
দোকানিরা জানিয়েছেন, ফুটপাত ও মার্কেটগুলোতে সোয়েটার, উলের পোশাক, বেজার, ট্রাউজার, জ্যাকেট, চাদর, মাপলার, কানটুপিসহ নানা ধরনের শীতবস্ত্রের দাম এখন তুলনামূলক বেশি।
মৌলভীবাজার শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কের জুলিয়া শপিং সিটি ও আশরাফ সেন্টার এর কাপড় ব্যবসায়ী শাহীন,কাবের,রিপন, সুকান্ত,অজিত,মামুন, সোহাগ হোসেন দৈনিক মৌমাছি কন্ঠকে বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে শীতের পোশাক ভালো বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নানা ধরনের শীতের পোশাক এনেছি। ক্রেতারাও ভিড় করছেন পছন্দের পোশাক কিনতে। তাই, বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।
দামের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শীতের সময়ই কেবল গরম কাপড় বিক্রি হয়। তাই, ব্যবসায়ীরা একটু লাভে বিক্রি করছেন। তবে দাম সর্বসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই আছে।
অন্যদিকে, অপেক্ষাকৃত কম দামে বিভিন্ন ধরনের শীত পোশাক পাওয়া যাচ্ছে জেলা শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার জেলা শহরসহ অন্যন্যা উপজেলার ফুটপাতে। মার্কেটের তুলনায় দাম কম হওয়ায় নিম্ন আর মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই ভিড় করছেন ফুটপাতে। মৌলভীবাজার জুলিয়া শপিং সিটি,আশারাফ সেন্টার, বঙ্গবাজার, জনতা ম্যানশন,সেভেন স্টার, আহমদ ম্যানশন এর আশপাশের ফুটপাতে সব ধরনের শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।
এসব মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতে উলের সোয়েটারের দাম পড়ছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা। মানভেদে জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। এসব মার্কেটে দেশীয় তৈরি চাদর ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা, উলের সোয়েটার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, কার্ডিগান ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এবং কানটুপি দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ইামী-দামী উন্নত কিছু মার্কেটে বেজার ১ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা, চামড়ার জ্যাকেট ২ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, গত বছরের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেশি দামে শীতবস্ত্র বিক্রি করছেন তারা।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা গেছে, চীনের বিভিন্ন ধরনের শাল ও চাদর বিক্রি করছেন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। দেশি ভালো মানের চাদরের দাম ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা। উলের তৈরি সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৮০০ হাজার টাকায়।
বিক্রেতা তানভীর বলেন, ‘শীত বাড়ায় কেনাবেচা বাড়ছে। সারা দিনই কাপড় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বেশি কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শীতের পোশাক তো সারা বছর বিক্রি হয় না। এ সময় চাহিদা বেশি থাকায় দাম একটু বেশি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহর ও জেলা শহরের শপিং মহল ও অভিযাত মার্কেট গুলোতে পাওয়া যাচ্ছে মেয়েদের হরেক রকমের কার্ডিগান, সোয়েটার ও গ্যাবার্ডিনের লং জ্যাকেট। প্রতিটি সোয়েটারের দাম ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। মেয়েদের কাছে গ্যাবার্ডিনের লং জ্যাকেটের চাহিদা বেশি বলে জানান ব্যবসায়ী মশাহিদ, দুরুদ, হোসেনসহ আরো অনেকে।
শহরের সাইফুর রহমান রোর্ডের ফুটপাত থেকে গরমের কাপড় কিনছিলেন রিকশাচালক মাজেদ। তিনি বলেন, ‘বড় বড় মার্কেট থেকে পোশাক কেনার সামার্থ্য নেই। এজন্য ফুটপাত থেকে কিনতে হচ্ছে। আমার মতো যেসব লোক বিভিন্ন শপিংমল থেকে নতুন পোশাক কিনতে পারেন না, তারা ফুটপাত থেকে কম দামে গরম পোশাক কিনেন। তবে, গত বছরের চেয়ে দাম বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা।
পত্রিকার বিক্রেতা শংকর,আপ্রান বলেন, ‘আমরা মূলত সোয়েটার বিক্রি করি। যেগুলো পোশাক কারখানা থেকে থেকে রিজেক্ট হয়ে আসে, সেগুলো বিক্রি করি। আমাদের ক্রেতা হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা অল্প দামে আমাদের পোশাক পেয়ে খুশি হন।