1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কমলগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী চুঙ্গা পিঠা উৎসব

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৫৩২ বার পঠিত

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী চুঙ্গাপিঠা উৎসব পালিত হয়। কালের আবর্তে এই পিঠা হারিয়ে যেতে বসেছে। আগেকার সময় শীতের রাতে বাড়িঘরে চুঙ্গাপিঠা উৎসব হতো। পৌষসংক্রান্তিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা মহাসমারোহে চুঙ্গা পিঠা বানিয়ে অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করত। বর্তমানে এগুলো স্বপ্নের মতোই মনে হয়। বৃহত্তর সিলেটের এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ সতিঝিরগাঁও গ্রামে শিক্ষক আবু নাসের শিপুর বাড়ীতে ঘরোয়া পরিবেশে ঐতিহ্যবাহী চুঙ্গা পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। গত রোববার (১৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত ব্যতিক্রমী এই উৎসবে গ্রামের হিন্দু-মুসলিম সর্বস্থরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সিলেটের লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম এই চুঙ্গা পিঠার সাথে আগামী প্রজন্মকে পররিচয় করিয়ে দেন সতিঝিরগাঁও এলাকার এক ঝাঁক তরুণ এ উৎসবের আয়োজন করে।
সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে আলোচনা, ধামাইল গান, গল্প, কবিতা আবৃত্তি ও কৌতুক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত চুঙ্গাপিঠা উৎসব পরিচালিত হয়। কবি শহীদ সাগ্নিক, সংস্কৃতিকর্মী শামছুল হক মিন্টু, তরুণ সমাজসেবক এবিএম আরিফুজ্জামান অপু, সাংবাদিক সাকিবুর রহমান সাকি, ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন, ইয়াসির আরাফাতসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষজন এতে অংশ নেন।
সিলেটের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী পিঠে-পুলির অন্যতম চুঙ্গা পিঠা উৎসব। এক সময় পাহাড়ি আদিবাসিদেরই খাবার ছিলো এই চুঙ্গা পিঠা। কালক্রমে তা সমতলের মানুষের উৎসবে অন্যতম অনুসঙ্গ হয়ে উঠে। বিরণি চাল ভিজিয়ে নরম করে বা চালের গুড়ো করে ঢলুবাঁশের চুঙ্গায় পোঁড়িয়ে পিঠা তৈরি করতে শিখে যায় সব জাতি-ধর্মের মানুষ। বাড়ীতে মেহমান বা নতুন জামাইকে শেষ পাতে চুঙ্গা পিঠা, হাঁসের মাংস, মাছ বিরান আর নারিকেলের পিঠা পরিবেশন না করলে বড়ই লজ্জার কথা ছিলো। শীতকালে গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে চুঙ্গা পোঁড়ানোর উৎসব হত। সিলেটের এই ঐতিহ্যবাহী চুঙ্গা পিঠা প্রাশ্চাত্য সংস্কৃতির ছোয়ায় হারাতে বসেছে। নতুন প্রজন্মের অধিকাংশ এর নামই জানে না। সিলেটের লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম এই চুঙ্গা পিঠার সাথে আগামী প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেন এলাকার এক ঝাঁক তরুণ।
চুঙ্গাপিঠা উৎসবের আয়োজকরা সত্যিকার অর্থে প্রমান করলেন, “ধর্ম যার যার, সংস্কৃতি সবার”। নানা আনুষ্ঠানিকতায় চুঙ্গা পিঠা উৎসবের কর্মযজ্ঞ। গ্রামের হিন্দু-মুসলিম মহিলারা গান গেয়ে ঢেঁকিতে চালে গুড়ি করেন। সন্ধ্যায় সারি বেঁধে বারন্দায় বসে টুই পিঠা, চৈপিঠা, লবনের সন্দেশ, বিরইন ভাত সহ বিভন্নি ধরনের পিঠা ও হাঁসের মাংস রান্না করেন। সন্ধ্যায় ছেলেরা খোলা আকাশের নিচে খড় দিয়ে চুঙ্গা পোঁড়ায়। মহিলাদের ধামাইল নৃত্যের মাধ্যমে রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পিঠা পরিবেশন করা হয়।
তাৎক্ষণিক ঘরোয়া এই আয়োজনের খবর পেয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের তরুণ প্রজন্ম স্বেচ্ছায় অংশগ্রহন করেন। এ যেন নাড়ীর টানে ঘরে ফেরা। সীমাহীন উৎসাহ, উদ্দীপনায় গ্রাম শহররের সকল বয়সের মানুষের উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিনত হয়।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক সংস্কৃতিকর্মী শামছুল হক মিন্টু জানান, সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত, স্বল্প পরিসরের তাৎক্ষণিক এই আয়োজন এত বিশাল আকার ধারন করবে তা ভাবিনি। গ্রামের প্রচলিত নিয়ম রক্ষায় অনেক প্রিয়জনকে ইচ্ছা থাকা সত্বেও মিস করেছি, তাই দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে প্রতি বছর আরও বৃহত্তর পরিসরে চুঙ্গা পিঠা উৎসব আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। ক্ষণিকের জন্য আমরা ফিরে গেলাম আমাদের সেই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী অতীতে। এ যেন এক অন্যরকম ভাল লাগা।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..