শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রাজস্ব প্রশাসনের বিভিন্ন গ্রেডে সরকারি চাকরি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে চা-শ্রমিক সম্প্রদায়কে হেয় করার অভিযোগ ওঠেছে। চা শ্রমিকদের ‘কুলি’ সম্বোধন করে ছাপানো প্রশ্নের প্রতিবাদ করেছে সচেতন চা শ্রমিক ছাত্র ও যুবকরা।
শনিবার মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সচেতন চা শ্রমিক ছাত্র ও যুবকদের ব্যানারে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন বিভিন্ন চা বাগানের ছাত্র-যুবক সংগঠন ও ছাত্র-যুবকবৃন্দ।
এ সময় চা শ্রমিক সন্তানরা বক্তব্যে বলেন, শুক্রবার মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রাজস্ব প্রশাসনের চারটি গ্রেডে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে একটি জায়গায় চা-শ্রমিককে ‘কুলি’বলা হয়েছে। যা চা শ্রমিক সম্প্রদায়কে হেয় করার সামিল। এর তীব্র প্রতিবাদ ও এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তারা।
এই কর্মসূচীর সমন্বয়কারি মোহন রবিদাস বলেন- “বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া, অবহেলিত ও লাঞ্চিত জনগোষ্ঠী হলো চা শ্রমিক। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এই সময়ে মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে একে তো চা শ্রমিকরা কোনভাবেই জীবনযাপন করতে পারছে না। তার উপর বিভিন্ন সময় তাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করে কটুক্তি করা হয়। কখনো ‘বাগানী’, কখনো ‘কুলি’ ইত্যাদি অপমানজনক শব্দ ব্যবহার করা হয়। যা খুবই দুঃখজনক।”
মোহন রবিদাস বলেন- “গত গত ৪ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের “ক্রেডিট চেকিং-কাম-সায়রাত সহকারি পদের লিখিত পরীক্ষায় চা শ্রমিকদের ‘কুলি’ সম্বোধন করায় আমরা খুবই হতাশ ও মর্মাহত। যেখানে এই নীরিহ চা শ্রমিকদের ‘সামাজিক মর্যাদা’ প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি। সেখানে ডিসি অফিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রতিষ্ঠানের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নে চা শ্রমিকদের ‘কুলি’ আখ্যা দেয়া হয়েছে।
আমরা গতকাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানানোর পরেও সংশ্লিষ্ট মহল থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার কোন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আমরা আমাদের “মান-মর্যাদা” রক্ষার লড়াই রাস্তায় নেমেছি।”
ইটা চা বাগানের চা শ্রমিক সন্তানদের সংগঠন “প্রত্যাশা বাংলাদেশ”-এর সাবেক সহ-সভাপতি নূরে আলম বলেন,” আমরা একে তো কম মজুরিতে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করছিঅ তার উপর আমাদেরকে “কুলি” বলে কটাক্ষ করা হয়। যা কোনভাবেই মেনে নেয়ার মতো না। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।”
আরো বক্তব্য রাখেন- ভুড়ভুড়িয়া ইয়াং স্টার সামাজিক সংগঠনের সভাপতি রিপন মৃধা, ভাড়াউড়া যুব উন্নয়ন সংঠনের সভাপতি বিষ্ণু হাজরা রাজু, চা কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খাইরুন আক্তার।
এছাড়া হাসিমুন বেগম, কাজল হাজরা, দিপক পাল, সুমন কুর্মী, রিপন বোনার্জী, প্রমুখ।
বক্তারা বলেন- অবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় না আনা হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে।
এদিকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য বিভাগীয় নির্বাচনী বোর্ড দুঃখ প্রকাশ করছে।