শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১২:৫০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: জীববৈচিত্র্য, নান্দনিক সৌন্দর্য আর দেশের বিখ্যাত ও শ্রেষ্ঠ বন লাউয়াছড়া জাতীয় পার্ক। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এই পার্ককে কেউ বলেন রেইন ফরেস্ট। কেউ বলেন ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এই রিজার্ভ ফরেস্ট পাখি দর্শনের জন্য দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান এবং উল্লুক দেখার জন্য শ্রেষ্ঠ উদ্যান।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণী আইন অনুসারে ২ হাজার ৭৪০ হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের অভ্যন্তরে ১ হাজার ২৫০ হেক্টর এলাকা নিয়ে ১৯৯৬ সালে এই পার্কটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
লাউয়াছড়া বনের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে অতি বিরল প্রজাতির উল্লুক আর অজগর সাপ। এ দু’টি প্রাণীকে লাউয়াছড়ার প্রাণ বলা হয়ে থাকে।
পর্যটক, দর্শনার্থীরা লাউয়াছড়া বনে এসে দুর্লভ বৃক্ষ আর নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিশেষ করে উল্লুক আর অজগর দেখে হন মুগ্ধ। পৃথিবীর যে ৪টি দেশে উল্লুক দেখা যায় এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম এবং এই লাউয়াছড়া বন উল্লুকের বৃহত্তম আবাসস্থল। অন্য যে দেশে উল্লুক দেখা যায় সেগুলো হলো– ভারত, চীন ও মিয়ানমার।
এই পার্কটি এখন বিশ্বের মানচিত্রে এক গৌরবময় স্থান দখল করে আছে। এই পার্কটি এখন শিক্ষা, গবেষণা, ইকো-ট্যুরিজম, পারিবারিক পর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থা, অফিস, সংগঠন এমনকি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সফরেও আসছেন। আসছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বনভোজনেও। আসছেন বহু বিদেশি- বিদেশিনীও। তাছাড়া বিশ্বের অনেক নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণার জন্যও গবেষকরা আসছেন। ইতোমধ্যে এ বনে উল্লুক ও অজগর সাপ নিয়ে গবেষনা করেছেন দেশি-বিদেশি গবেষকরা।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দুরে অদ্ভুত এক নির্জন পরিবেশে অবস্থিহত কমলগঞ্জের মিশ্র চিরহরিত এই পার্কে রয়েছে ৪৬০ প্রজাতির জীব। যার মধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, নানা বৈচিত্র্যের ২০ এর অধিক প্রজাতির অর্কিড। এছাড়াও রয়েছে ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭ প্রজাতির পোকা-মাকড় ও ২৪৬ প্রজাতির পাখি।
এই লাউয়াছড়া পার্ক এখন শুধু পর্যটকেরই স্থান নয়, এ পার্ক এখন এক জীবন্ত ও প্রাকৃতিক গবেষণাগার যেখানে বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণার জন্য গবেষকরা আসছেন।