শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:০২ অপরাহ্ন
কুলাউড়া প্রতিনিধি :মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে অবস্থিত মেরিনা চা-বাগানে বেশ কয়েকটি টিলা কেটে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। পরিবেশ আইনের কোন তোয়াক্কা না করেই খননযন্ত্র (এস্কোভেটর) দিয়ে বাগান কতৃপক্ষ এমন কাজটি করেছেন। আরও কয়েকটি টিলা কেটে নতুন রাস্তা তৈরীর প্রস্তুতিও নিচ্ছে বাগান কতৃপক্ষ। বৃষ্টি শেষ হলেই নতুন রাস্তা তৈরীর কাজ শুরু হবে। আর এজন্য ভাড়া করা খননযন্ত্রটি এখনও বাগান এলাকায় রাখা হয়েছে।
মেরিনা বাগান এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মেরিনা বাগানের ৮ ও ৯ নং সেকশন এলাকায় ১০-১২ টি উচু-নিচু টিলা কেটে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা তৈরী করা হয়েছে। উত্তর কুলাউড়ার ব্যবসায়ী ছলামত মিয়ার খননযন্ত্র (এস্কোভেটর) দিয়ে ১৫-২০ দিন আগে থেকে টিলা কেটে রাস্তা তৈরীর কাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও বাগানের ৯ নং সেকশন এলাকার একটি টিলার একেবারে স্থর পরিবর্তন করে তৈরীকৃত রাস্তাটি রিজার্ভ ফরেষ্ট এলাকায় নিয়ে সংযোগ করা হয়েছে। কোন স্বার্থে বাগান কতৃপক্ষ টিলা কেটে রাস্তা তৈরী করে রিজার্ভ ফরেষ্ট এলাকায় সংযোগ করছে, এমন প্রশ্ন বাগানের পাশর্^বর্তী এলাকার বাসিন্দাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগানের পাশর্^বর্তী পাঁচপীর জ¦ালাই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, উচুঁ উচুঁ টিলাগুলো কাটার ফলে নিচের অনেক টিলা ধ্বসে যাচ্ছে। তাছাড়া কাটা মাটিগুলো প্রবাহমান খাল-ছড়ায় পড়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। যারফলে ছড়ার উপরীভাগের জমিগুলোতে পানি জমাট হয়ে অনেকের ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয়রা আরও জানান, উত্তর কুলাউড়া এলাকার ছলামত মিয়ার গাড়ি (খননযন্ত্র) দিয়ে এই মেরিনা বাগানসহ বিভিন্ন এলাকার টিলায় কাজ করানো হয়। টিলা কাটা আইনি অপরাধ এমনটি বলার পরও ছলামত মিয়া কোন কর্ণপাত না করেই তিনি বিভিন্ন জনকে গাড়ি ভাড়া দেন। এই ছলামত মিয়ার গাড়ি দিয়ে পাশর্^বর্তী গোগালিছড়া এলাকায়ও একটি টিলা কেটে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে মেরিনা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক রবিউল হাসান বলেন, বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিবন্ধনের শর্ত মোতাবেক বাগানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে নতুন করে এলাকা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চা রোপণ করা হচ্ছে। আর এসব টিলায় মালীদের চলাচল ও উত্তোলিত চা-পাতা পরিবহনের জন্য রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি কোনো দপ্তরের অনুমতি রয়েছে কি না জানতে চাইলে, তিনি বলেন, চা-বাগান এলাকায় টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণে পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ নেই। বাগান এলাকায় রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি চা বোর্ডের অধীন।
পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারি পরিচালক মো. বদরুল হুদা জানান, এধরনের কাজে ইতিপূর্বে কুলাউড়ায় আরেকটি বাগানকে জরিমানা করা হয়েছে। পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে এমন কোন কাজ করার বা টিলা কাটার সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।