1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

সভ্যরাষ্ট্র নির্মাণে বাঙালি মুসলিমের এতো ব্যর্থতা কেন? – ফিরোজ মাহবুব কামাল

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ জুন, ২০২২
  • ১৮১ বার পঠিত

সভ্য রাষ্ট্রের নির্মাণ কীরূপে?

আইনের শাসন যেদেশে বিলুপ্ত, গণতন্ত্র যেদেশে কবরে শায়ীত, শাসন যেখানে অসভ্য ফ্যাসিবাদী ভোটডাকাতদের এবং প্লাবন দেশে গুম-খুন-ধর্ষণ-সন্ত্রাসের -সে রাষ্ট্রকে আর যাই হোক সভ্যরাষ্ট্র বলা যায়না। সভ্য ও অসভ্য ব্যক্তির ন্যায় সভ্য ও অসভ্য রাষ্ট্রেরও সুনির্দিষ্ট কিছু আলামত ও পরিচিতি আছে। সেগুলি খালি চোখেও দেখা যায়। তা নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন পড়ে না। চোর-ডাকাত, ভোটডাকাত, খুনি, ধর্ষক ও সন্ত্রাসীগণ দেখতে যতই মানুষের মত হোক না কেন, তাদেরকে সভ্য মানুষ বলা যায় না। দেখতে পশু না হলেও তারা পশুর চেয়েও বর্বর, হিংস্র ও নৃশংস। হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, পুলিশ রিমান্ডে অত্যাচার ও গণধর্ষণের ন্যায় মানব সমাজের ভয়ংকর অপরাধগুলো কখনোই পশুদের দ্বারা হয়না, সেগুলি হয় মানবরূপী পশুদের হাতে। একটি দেশকে এরাই অসভ্য দেশে পরিণত করে। যেদেশে গুম, খুন, ধর্ষণ, চুরিডাকাতি, ভোটডাকাতি, ব্যাংক লুট, সরকারি তহবিল লুটের ন্যায় দুর্বৃত্তির তান্ডব -সে দেশকে কি কখনো সভ্য দেশ বলা যায়? এমন দেশকে সভ্য দেশ বললে, অসভ্য দেশ বলতে কোন দেশকে বুঝায়? জনগণের কথা বলা, লেখালেখি, মিটিং-মিছিল, স্বাধীন ভাবে ভোট দেয়া ও রাজনৈতিক লক্ষ্যে সংগঠিত হওয়ার মৌলিক অধিকার যদি কেড়ে নেয়া হয় –তবে অসভ্য দেশ হতে আর কিছু বাকি থাকে কী?

প্রতিটি ব্যক্তি ও জাতিকে প্রতি মুহুর্ত লড়াই নিয়ে বাঁচতে হয়। সে লড়াইটি শুধু ঘর বাঁধা, উপার্জন ও পানাহারে বাঁচার নয়। বরং সবচেয়ে বড় লড়াইটি হয় সভ্যতর ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণে। এ লড়াইটি যে দেশের জনগোষ্ঠির জীবনে অতি তীব্র, সভ্য ভাবে বেড়ে উঠার সম্ভাবনাও সেখানে সর্বাধিক। মানব জীবনের মূল পরীক্ষাটি এখানেই। পশু জীবনে এরূপ লড়াই থাকে না বলেই সে পশু। পশুরা বন-জঙ্গলের জীবন নিয়েই খুশি। কিন্তু মানব জীবনের মিশন ও ভিশন ভিন্ন। কোন মানব গোষ্ঠির জীবনে যদি সভ্য ভাবে বেড়ে উঠার লাগাতর লড়াইটি না থাকে, তবে সে জনগোষ্ঠির জীবনেও অসভ্যতা নেমে আসে। সভ্যতর, পরিশুদ্ধতর ও পবিত্রতর হওয়ার যে লাগাতর লড়াই –সেটিই হলো মুসলিম জীবনের জিহাদ। এটিই ইসলামে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। মানব কতটা মহামানব হবে এবং ফেরেশতাদের চেয়ে কতটা উপরে উঠবে এই জিহাদের উপর। পবিত্র কুর’আন নাযিল হয়েছে এ মহত্তর কাজে পথ দেখাতে। নবীজী (সা)’র হাদীস: আল্লাহর কাছে সেই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যে শ্রেষ্ঠ তাকওয়া ও চরিত্রের বিচারে। তাই মানব জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ হলো তাকওয়া সম্পন্ন উন্নত চরিত্রের সভ্য মানব রূপে বেড়ে উঠা। ব্যক্তির নামাজ-রোজা, হজ্জ-যাকাত, তাসবিহ-তাহলিল ও কুর’আন পাঠ যদি তাকে উন্নত চরিত্র ও তাকওয়া না দেয় তবে বুঝতে হবে সেগুলি ব্যর্থ। তবে উন্নত ব্যক্তির নির্মাণে অতি গুরুত্বপূর্ণ হলো সভ্য রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণ। কারণ, এ কাজ ঘরে বা গুহায় বসে একাকী সম্ভব নয়। এজন্য চাই, সভ্য পরিবারের সাথে সভ্য রাষ্ট্র ও সভ্য সমাজ। একজন সুস্থ শিশুকে সভ্য নাগরিক রূপে গড়ে তোলার দায় শুধু তার পিতামাতা ও তার পরিবারের নয়। সেটি তাদের পক্ষে একাকী সম্ভবও নয়। সে দায়িত্বটি শিশুর প্রতিবেশীর, স্কুলের, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের, সমাজের ও রাষ্ট্রের। দেশের সিকি ভাগ লোক চাষাবাদ করলে সমগ্র দেশবাসীর জন্য খাদ্য জোগাতে পারে। কিন্তু দেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক লক্ষ শিক্ষক জনগণের শিক্ষাদানের কাজটি সমাধা করতে পারে না। এ দায়িত্ব প্রতিটি পিতা, প্রতিটি মাতা, প্রতিটি অভিভাবক ও প্রতিটি নাগরিকের। নিজে জ্ঞানার্জন করা এবং অন্যকে জ্ঞান দেয়া –ইসলামে তাই পবিত্র ইবাদত। নবীজী (সা:) প্রতিটি সাহাবা যেমন ছাত্র ছিলেন, তেমনি শিক্ষকও ছিলেন। এমন মিশন নিয়ে বাঁচলেই সমগ্র দেশ পাঠশালায় পরিণত হয়। এটিই তো ইসলামের ভিশন। ইসলাম জাহেল বা অজ্ঞদের ধর্ম নয়। তাই জনগণকে অজ্ঞ বা জাহেল রেখে ইসলামের মিশনকে কখনোই সফল হয় না। এজন্যই নামাজ-রোজার পূর্বে জ্ঞানার্জনকে ফরজ করা হয়েছে। এবং ইসলামই একমাত্র ধর্ম যে ধর্মে অজ্ঞ থাকা পাপ এবং জ্ঞানার্জন বাধ্যতামূলক। এরূপ বিধান অন্য কোন ধর্মে নাই।

রোজ হাশরের বিচার দিনে বিচার হবে নিজেকে কে কতটা সভ্যতর করলো –শুধু তা নিয়েই নয়। বরং সমাজ ও রাষ্ট্রকে সভ্যতর করার জিহাদে কার কি ভূমিকা ছিল –বিচার হবে তা নিয়েও। জীবনে সভ্যতর হওয়ার এ লড়াইটি না থাকার অর্থ শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিচারে পিছিয়ে পড়া তথা অসভ্য হওয়া। কারণ, স্বাস্থ্য হারাতে মেহনত করা লাগে না; স্বাস্থ্য রক্ষায় অমনযোগী হওয়াটাই সে জন্য যথেষ্ট। তেমনি মেহনত লাগে না অসভ্য হতে; সভ্য হওয়ার লড়াইটি না থাকাটাই যথেষ্ঠ। মিথ্যা, অবিচার ও দুর্বৃত্তি থেকে নিজেকে ও সমাজকে মুক্ত করার যে লাগাতর লড়াই –সেটিই ইসলামের মূল মিশন। সত্যের চেয়ে মিথ্যা অধিক শক্তিশালী। কোভিড ভাইরাসের চেয়েও মিথ্যা অধিক সংক্রামক। এজন্যই বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ সত্য দ্বীনকে ভূলে মিথ্যার অনুসারী। ফলে মুর্তি, নদী, পাহাড়, পুরুষের লিঙ্গ, গরু, সাপ ইত্যাদিও পূজা পায়। তাই পবিত্র জিহাদ হলো মিথ্যার নির্মূলের মধ্য দিয়ে ইসলামের শাশ্বত সত্যকে বিজয়ী। আর মিথ্যার নির্মূলে জরুরি হলো মিথ্যা-ব্যবসায়ী দুর্বৃত্তদের নির্মূল করা। কারণ দুর্বৃত্তরাই মিথ্যার পক্ষের সৈনিক। মিথ্যাকে এই দুর্বৃত্তরাই সযত্নে বাঁচিয়ে রাখে। পবিত্র কুর’আনের সুরা আল-ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা যে কারণে মুসলিমদের সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মাহর মর্যাদা দিয়েছেন সেটি অধিক হারে নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত পালনে জন্য নয়, বরং এই দুর্বৃত্তদের নির্মূলের জিহাদ নিয়ে বাঁচার জন্য। কারণ অসভ্যতার নির্মূলে ও উচ্চতর সভ্যতার নির্মূলে একাজটি হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দুর্বৃত্তদের নির্মূলের পরই সত্য ও সুবিচারের প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

ইসলামের লাগাতর জিহাদের রয়েছে দুইটি সুনির্দিষ্ট ফ্রন্ট। জিহাদটি যেমন নিজের অশুভ প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে, তেমনি বাইরের শত্রু-শক্তির নির্মূলে। এ দুই ফ্রন্টের জিহাদের কোনটিতেই কোনরূপ বিরতির অবকাশ নাই। কারণ ভিতরে ও বাইরে –উভয় জায়গাতেই শয়তানী শক্তির হামলায় কোন বিরতি নাই। শয়তানের সে অবিরাম হামলা থেকে বাঁচতে চাই লাগাতর প্রতিরক্ষা। মুসলিম জীবনে এটিই হলো মূল চ্যালেঞ্জ। লাগাতার প্রতিরক্ষা ও পরিশুদ্ধির প্রচেষ্ঠা না থাকলে পরাজিত হয়ে হারিয়ে যেতে হয়। সে পথটি নীচে নামার তথা অসভ্যতার। এ পথটি জাহান্নামের। শয়তানের হামলার কেন্দ্র বিন্দু হলো ব্যক্তির আত্মার ভূমি তথা নফস। শয়তান সেখানেই তার ঘাঁটি নির্মাণ করতে হয়। তাই ঈমানদারের জীবনে জিহাদের শুরুটি হয় নিজ নফসের অঙ্গণকে শয়তানের দখল থেকে মুক্ত রাখতে। ইসলামে সে যুদ্ধটিই হলো জিহাদে আকবর। ব্যক্তির চরিত্রের পরিশুদ্ধির যুদ্ধটি শুরুটি হয় নফসের পরিশুদ্ধি থেকে। এ যুদ্ধে যে বিজয়ী হয়, সেই সত্যিকার অর্থে সফলকাম। পবিত্র কুর’আনে তাই বলা হয়েছে: “ক্বাদ আফলাহা মান যাক্কাহা।” অর্থ: “সেই সফল হলো যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করলো তথা পরিশুদ্ধির লড়াই নিয়ে বাঁচলো।” –(সুরা শামস, আয়াত ৯)। লাগাতর পরিশুদ্ধ হওয়ার চেষ্টায় লেগে থাকার অর্থই হলো লাগাতর সভ্যতর হওয়া। এটিই হলো মুসলিম জীবননের মিশন। কুর’আনের জ্ঞানার্জন, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাতের ন্যায় ইবাদতের সকল বিধানই হলো মুসলিম জীবনে সে পরিশুদ্ধকরণের প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখা ও তীব্রতর করা। এ মিশনের বাইরে যে জীবন সেটি দিন দিন অসভ্য ও দুর্বৃত্ত হওয়ার, তথা জাহান্নামের উপযোগী হওয়ার।

নবীজী (সা:) বলেছেন, ঈমানদার ব্যক্তি কোন জনশূণ্য পথে একাকী চললেও তাঁর পিছনে শয়তান তার ষড়যন্ত্র নিয়ে হাজির হয়। তাই ঈমানদার যুদ্ধ না চাইলেও শয়তান তার উপর এক বিরামহীন যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। তাই ঈমান নিয়ে বাঁচতে হলে প্রতি পদে জিহাদ নিয়ে বাঁচা ছাড়া ভিন্ন পথ নাই। এ জন্যই কে ঈমানদার এবং কে বেঈমান –সেটি বুঝা যায় জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে সে লাগাতর জিহাদটি আছে কিনা, সেটি দেখে। নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত বহু মুনাফিকের জীবনেও থাকে। কিন্তু তাদের জীবনে জিহাদ থাকেনা। তারা বরং ভেসে চলে শয়তানী শক্তির সৃষ্ট রাজনীতি ও সংস্কৃতির স্রোতে। যদি দেশ শয়তানী শক্তির হাতে অধিকৃত হয় এবং আদালত থেকে বিলুপ্ত হয় শরিয়ত, তবুও যদি মুসলিম নামধারী কোন ব্যক্তির জীবনে জিহাদ শুরু না হয় -তবে বুঝতে হবে ঈমানের দাবীতে সে ভন্ড। ধর্মীয় লেবাস পড়ে ও মসজিদ-মাদ্রাসা গড়ে নিজেকে সে মুসলিম রূপে জাহির করে মাত্র। জিহাদ ও ঈমান যে মুসলিম জীবনে একত্রে চলে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সে ঘোষণাটি এসেছে সুরা হুজরাতের ১৫ নম্বর আয়াতে। উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে, ঈমানের দাবীতে একমাত্র তারাই সাচ্চা যাদের জীবনে জিহাদ আছে এবং সে জিহাদে নিজেদের জান ও মালের বিনিয়োগ আছে।

সভ্য সমাজ ও সভ্য রাষ্ট্র কখনোই বেশী বেশী নামাজ-রোজা, হজ্জ-যাকাত ও মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণের কারণে গড়ে উঠে না। সেটি সম্ভব হলে বাংলাদেশ দুর্বৃত্তিতে বিশ্ব রেকর্ড না গড়ে গড়ে তুলতো সভ্য সমাজ ও সভ্য রাষ্ট্র। কারণ, এতো মসজিদ ও এতো নামাজী বিশ্বের আর কোন দেশে আছে? ব্যক্তি ও জাতির জীবনে পরিশুদ্ধি আসে এবং রাষ্ট্র সভ্যতর হয় জনগণের জীবনে লাগাতর জিহাদের কারণে। তাই জিহাদ মুসলিমদের জন্য ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয় নয়, মহান আল্লাহতায়ালা পক্ষ থেকে নির্ধারিত এটিই হলো সর্বশ্রেষ্ঠ ফরজ ইবাদত। যারা এ জিহাদে শহীদ হয় তাদেরকে তিনি শহীদের মর্যাদা দিয়ে বিনা বিচারে জান্নাতে নেন। এ পৃথিবীতে মানবের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ দানটি হলো পবিত্র কুর’আন; আর সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কারটি হলো শাহাদত। এ পুরস্কারটি জিহাদবিমুখ ভন্ডদের জুটে না। এ পুরস্কারটি সবচেয়ে বেশী পেয়েছিলেন সাহাবাগণ। অর্ধেকের বেশী সাহাবা তাই শহীদের মর্যাদা পেয়েছেন। প্রাথমিক যুগের মুসলিমদের বিজয় ও গৌরবের মূল কারণ হলো তাদের জিহাদ এবং সে জিহাদে অর্থদান ও প্রাণদান। কোন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে ইসলামবিরোধী শক্তির বিজয় ও দুর্বৃত্তির তান্ডব দেখে এ কথা নিশ্চিত বলা যায়, শয়তানী শক্তির নির্মূলে সে দেশে কোন জিহাদ সংগঠিত হয়নি। বরং ইতিহাসটি এখানে আত্মসমর্পণের। বাংলাদেশ হলো তারই জাজ্বল্যমান উদাহরণ।

শুধু বিশ্বের পন্ডিতজন ও ইতিহাসবিদদের চোখেই নয়, মহান আল্লাহতায়ালার রাডারেও সভ্য রূপে বেড়ে উঠার লড়াইয়ে ব্যক্তি, জাতি বা জনগোষ্ঠির আত্মনিয়োগ, সফলতা ও ব্যর্থতার বিষয়গুলো প্রতি মুহুর্তে মনিটরিং হয়। পবিত্র কুর’আনে বহু জাতির ব্যর্থতার কাহিনীগুলো যেমন তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি বর্ণনা দেয়া হয়েছে তাদের নিজ হাতে অর্জিত আযাবের কথাও। সেটি এই জন্য যে, ভবিষ্যতের মানবগণ যেন তাদের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেয় এবং সাবধান হয়ে যায়। সভ্যতর রূপে বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার এ ইতিহাস থেকে শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। এমন কি মানব রচিত ইতিহাসের বইয়েও বহু জাতির ভয়ানক দুর্বৃত্তি ও ব্যর্থতার চিত্র পাওয়া যায়। পবিত্র কুর’আনই হলো মানব জাতির জন্য মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সর্বশেষ গ্রন্থ । যদি আর কোন ধর্ম গ্রন্থ ভবিষ্যতে নাযিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো তবে বাংলাদেশীদের ব্যর্থতা নিয়ে মহান স্রষ্টার নিজের বয়ানটি বিশ্ববাসী অবশ্যই জানতে পারতো –যেমন জানতে পারছে আদ, সামুদ ও ফিরাউনের অনুসারীদের ব্যর্থতার কথা। কারণ, দুর্নীতিতে বাংলাদেশ বিশ্বে ৫ বার প্রথম হয়ে চমক দেখিয়েছে কী ভাবে দ্রুত নীচে নামতে হয়। বিশ্ব মাঝে এরূপ অর্জন একমাত্র বাংলাদেশের। এ রায়টি ট্রান্সপ্যারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ন্যায় একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার -যার কাজ হলো বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের দুর্নীতির উপর লাগাতর মনিটরিং করা। ফলে শত শত বছর পরও বিশ্ববাসীর জন্য বাংলাদেশ শিক্ষণীয় মডেল হতে পারে। কীরূপে একটি রাষ্ট্র ও জনগোষ্ঠি দ্রুত ব্যর্থ হয় এবং দুর্বৃত্তিতে বিশ্বে বার বার প্রথম হয় –সে বিষয়ে নানা দেশের মানুষ জ্ঞান লাভ করতে পারে। বাংলাদেশ চমক দেখিয়েছে দেশ জুড়ে ভোটডাকাতি করে। চমক দেখিয়েছে কী ভাবে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়ে ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠা দেয়া যায়। স্বাস্থ্য বাঁচাতে হলে প্রাননাশী রোগ গুলো চিনতে হয়। তাই দুর্নীতি প্লাবন ও ফ্যাসিবাদের নৃশংসতা থেকে যারা বাঁচতে চায় –সেগুলির চরিত্র ও পথকেও চিনতে হয়। ইতিহাস বিজ্ঞানে বাংলাদেশের বিশেষ গুরুত্ব এখানেই।

 

ব্যর্থতার দলিল

বাংলাদেশের বুকে অসভ্য কর্ম ও ব্যর্থতার তালিকাটি বিশাল। দুর্নীতিতে বিশ্ব মাঝে পর পর পাঁচ বার প্রথম হওয়ার বিষয়টি যে কোন সভ্য ও দেশপ্রেমিকের মগজে ধাক্কা দিবে –সেটিই স্বাভাবিক। ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর যেরূপ দেশজুড়ে ভোটডাকাতি হলো -সেটিও কি আজ অবধি অন্য কোন সভ্য দেশে হয়েছে? তাক লাগিয়ে দেয়ার ন্যায় এ কর্মটিও একমাত্র বাংলাদেশের। ২০১৪ সালে সংসদের ১৫৩ আসনে কোন রূপ নির্বাচন না করে যেরূপ সরকার গঠিত হলো -সেটিও কি কোন গণতান্ত্রিক দেশে কখনো ঘটেছে? বাংলাদেশীগণ রেকর্ড গড়েছে আরেকটি ক্ষেত্রেও। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশই হলো একমাত্র দেশ যে দেশে শেখ মুজিবের ন্যায় গণতন্ত্র হত্যাকারী, ফ্যাসিবাদী, গুম-খুনের নায়ক ও বাকশালী স্বৈরচারীকে জাতির পিতা

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..