1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

মৌলভীবাজার কৃষক সংগ্রাম সমিতির স্মারকলিপি পেশ

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২
  • ২৪৫ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার :: স্মরণকালে ভয়াবহ বন্যাকবলিত সিলেট-সুনামগঞ্জ জেলাকে বন্যাদূর্গত এলাকা ঘোষণাসহ ১১ দফা দাবিতে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। ২৭ জুন বিকাল ৩ টায় বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটির পক্ষ থেকে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক অবনী শর্ম্মা, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট(এনডিএফ) মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি শহীদ সাগ্নিক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস ও কৃষক সংগ্রাম সমিতির জেলা কমিটির সদস্য মোঃ গিয়াস উদ্দিনসহ নেতৃবৃন্দ। স্মারকলিপির অনুলিপির কৃষি, খাদ্য, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের নিকট পাঠানো হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ দেশের বেশ কিছু জেলা ভয়াবহ বন্যায় জান-মাল, গবাদিপশুসহ ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ফলে জনগণ আশ্রয়হারা, গৃহহারা হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। নেই খাবার, বিশুদ্ধ পানি এমনকি রান্না করা কিংবা শৌচ কাজ করার মত অবস্থা। বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা পানি নিচে চলে যাওয়ায় বিভাগীয় শহর ও জেলা শহর পর্যন্ত বিদ্যুহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, এখনও সকল এলাকায় স্বাভাবিক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়নি। বন্যার ভয়াবহতায় রেল, সড়ক ও বিমান যোগাযোগ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো; এখনও রাস্তা-ঘাট পানিতে ডুবে থাকায় জেলা শহরের সাথে উপজেলা পর্যায়ে যাতায়াত ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়েছে। এ সব অঞ্চলে নৌকাসহ যে সমস্ত জলযান দিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করা হতো প্রবল পাহাড়ি ঢলে বন্যার তোড়ে তা ভেসে গিয়েছে। যার ফলে বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলের মানুষ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। চীন-ভারতের সাথে বাংলাদেশের পদ্মা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ যে অভিন্ন নদ-নদী রয়েছে সেগুলোর উজান থেকে পানি প্রত্যাহারের জন্য চীন-ভারতীয় অংশে বাঁধ, ব্যারেজ, গ্রোয়েন তৈরি করা হয়েছে। সেগুলো একযোগে খুলে দেওয়ায় প্রচন্ড বন্যায় জনগণ তাদের গৃহস্থালী জিনিসপত্র, গবাদিপশুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে পারেনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রাথমিক তথ্য মতে সিলেট বিভাগে কৃষিখাতে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই নয় এবারের বন্যায় সারাদেশে এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; এখনো বিভিন্ন এলাকায় লাশ ভেসে উঠছে। ঘরবাড়ি, সহায়-সম্বল, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। ভয়াবহ বন্যায় লক্ষ লক্ষ আক্রান্ত বন্যাকবলিত জনসাধারণের কাছে এখন পর্যন্ত সরকারি ত্রাণ সামগ্রী নামমাত্র পৌঁছেছে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারি ত্রাণ মাথাপ্রতি বরাদ্দ ৬.৫৫ টাকা এবং চাল আধা কেজির কম। প্রায় প্রতিবছর আমাদের দেশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদির জন্য জান-মাল ফসলের ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। বলা হচ্ছে এর জন্য দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন কিসের জন্য, সে কথাটি আড়াল করা হচ্ছে। এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল সরকারের শাসন-শোষণ। আমাদের দেশসহ যে সকল দেশে মেগা উন্নয়ন চলছে, তার মূল কাজ হচ্ছে এসডিজি অর্থাৎ সাম্রাজ্যবাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। আর এ সমস্ত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণেই প্রকৃতি, জলবায়ুর বিরূপ পরিবর্তন হচ্ছে। অথচ বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ঘুর্ণিঝড় থেকে উদ্ধারের জন্য নেই কোনো বাস্তব ভিত্তিক কর্মসূচি। স্থায়ী সমাধানের জন্য নেই কোনো কার্যকর পরিকল্পনা। এর বিপরীতে আছে বিদেশি ঋণের বোঝা জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া। বন্যা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন নদ-নদী খনন। হাওর অঞ্চলের বন্যা রোধে সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, ধরলা নদীসহ পাহাড়ি নদ-নদী উপনদীগুলো খনন করতে হবে। একই সাথে ভৈরব থেকে মেঘনা নদীর উৎসমুখ পর্যন্ত খনন করতে হবে। বন্যাকবলিত এলাকার জনসাধারণের সমস্যা সমাধানে ১১ দফা দাবি নামা পেশ করা হয়। ১১ দফা হলোঃ(১)ভয়াবহ বন্যাকবলিত সিলেট-সুনামগঞ্জ জেলাকে দূর্গত এলাকা ঘোষণা কর। বন্যাদূর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ, বিশুদ্ধ পানি, নগদ অর্থ প্রদানসহ পয়ঃনিষ্কাশনের দ্রুত ব্যবস্থা করার পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য অস্থায়ী হাসপাতাল চালু করতে হবে।(২)বন্যাদূর্গতদের পুনর্বাসনে বাড়িঘর মেরামতের জন্য ব্যবস্থাসহ ফসল-হাস-মুরগি-গবাদি পশুর ক্ষতির জন্য কৃষকদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। ত্রাণ বিতরণে সকল ধরণের অনিয়ম-দূর্নীতি, দলবাজী ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে হবে।(৩)দূর্গত এলাকায় পশুখাদ্য এবং যোগাযোগ নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত নৌকার ব্যবস্থা করতে হবে। হাওর ও তুলনামূলক নিচু এলাকার সকল সরকারি স্থাপনা আশ্রয়কেন্দ্রের উপযোগী করে নির্মাণ করতে হবে। (৪)বন্যা পরিস্থিতিতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে লুটপাটকারী মজুদদার ও অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর রেশনিং চালু করতে হবে।(৫) দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং দফায় দফায় জ¦ালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করা যাবে না। (৬)বন্যাকবলিত এলাকায় কৃষি ঋণ, ব্যাংক ঋণ, এনজিও ঋণের সুদ মওকুফ এবং আগামী ফসল উঠানো পর্যন্ত এনজিওদের সকল ধরণের কিস্তি আদায় বন্ধ করতে হবে।(৭)বিনাসুদে কৃষকদের পর্যাপ্ত কৃষি ঋণ প্রদান এবং বন্যাদূর্গত এলাকার অসহায় জনগণের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করতে হবে। (৮)বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই-খাতা-কলমসহ শিক্ষা উপকরণ প্রদান এবং সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি ডিসেম্বর/২২ পর্যন্ত মওকুফ করতে হবে।(৯)নদ-নদী, খালবিল, হাওরে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, বাঁধ, বেড়িবাঁধ ইত্যাদি নির্মাণ করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্থ করে বন্যা ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারী সকল স্থাপনা অপসারণ করতে হবে।(১০)নদ-নদী ও খাল-বিলে কলকারখানার বর্জ্যসহ আবর্জনা ফেলে নদীর নাব্যতা নষ্ট করে জলাধারের পানি ধারণ ক্ষমতা নষ্ট করার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।(১১)উজানের দেশ ভারত ও চীন কর্তৃক আন্তর্জান্তিক নদী আইন লঙ্ঘন করে অভিন্ন নদীতে বাঁধ, ব্যারেজ, গ্রোয়েন ইত্যাদি নির্মাণ করে শুস্ক মৌসুমে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ও নাব্যতা সংকট সৃষ্টি করা এবং বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে দিয়ে অস্বাভাবিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে অভিন্ন নদ-নদীর বাঁধ অপসারণ ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকারকে যথাযথ ভূমিকা নিতে হবে।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..