শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন
আমি সচারাচর ফোনে টাকা তুলি না। শুধুমাত্র এমবি প্যাকেজ কেনার জন্যই টাকা তুলি। তো হঠাৎ একদিন ভুল করে কেউ একজন আমার ফোনে ৪৯ টাকা রিচার্জ করে দিলো। টাকা পাওয়ার পর থেকেই চিন্তায় পড়ে গেলাম। কারণ আমার কথা বলার মতো তেমন কেউ নেই। যাদের সাথে কলে কথা হয় তাদের সবারই মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ আছে। সেখানেই কথা হয়৷ এখন এই টাকা আমি কী করবো? অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিলাম বেস্টুর সাথে কথা বলে টাকাগুলো শেষ করবো। যেই ভাবা সেই কাজ। রাত ১১ টার দিকে কল দিলাম তাকে। এমনিতে আমাদের কথা শেষ হয় না। কিন্তু সেদিন এত ভেবেও কথা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কী একটা অবস্থা!
কোনো রকম কথা খুঁজে না পেয়ে বেস্টুর ভাই, আমার বোন সবার রিলেশন করা নিয়ে কথা বলা শুরু করলাম। না, কোনো জরুরী কথা নয়৷ একটাই স্লোগান চলছিল,
“দেখ ওরা কত্ত সুন্দর প্রেম করতেছে। আমাদের কপালে কী এসব নাই? সারাজীবন কী সিঙ্গেল ই থাকবো আমরা?”
একজন আরেকজনকে স্বান্তনা দিয়ে কথা শেষ করার পর যখন কল কাটলাম তখন দেখি মাত্র ১১ টাকা শেষ হয়েছে। অথচ আমার মনে হচ্ছিল সব টাকা মনে হয় আজকেই শেষ হয়ে যাবে। যাইহোক, এরপর আরেকজনকে কল দিলাম। লেখাপড়া নিয়ে একজন আরেকজনকে পাম দিতে শুরু করলাম।
“দোস্ত তুই তো এবার প্রথম হবি। আমি তো ফেইল করবো।”
আমার কথা শুনে সে আমাকে বললো,
“না না৷ আমি তো এবার পাশ করবো কিনা এটা নিয়েই সন্দেহ হচ্ছে।”
কিন্তু রেজাল্টের দিন দেখা যায়, দুইজনের রেজাল্ট কাছাকাছি। (উইথ ব্যাঙ ইমোজি।)
তো এত কথা বলার পরেও দেখলাম টাকা শেষ হচ্ছে না। মহা বি*পদে পড়লাম। এদিকে আমি হলাম অলসের ডিব্বা। কথা বলতেও আলসেমি লাগে। তাই ভাবলাম যেদিন মেয়াদ শেষ হবে তার আগের দিন আবার কাউকে কল দিয়ে সব টাকা শেষ করবো। এই কথা আমার মনে ছিল না। প্রতিদিনই কল দিবো দিবো করে আর দেওয়া হয়নি।
আজ ব্যালেন্স চেক করতে গিয়ে দেখলাম এখনো ৩ টাকা ৩৫ পয়সা আছে। কিন্তু মেয়াদ ২৯ তারিখ অর্থাৎ গতকালই শেষ হয়েছে। আপাতত ভাবছি,
“আমার মতো অলস দুনিয়ার বুকে আর কেউ নেই! যে কিনা মাত্র ৪৯ টাকা কথা বলে শেষ করতে পারে না!”
★সমাপ্ত★