1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

চিরকুটের গল্প প্রতিযোগিতার সপ্তাহের সেরা তৃতীয় গল্প ” বাবার জামা “- মোঃ মোছাব্বরি ইসলাম

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২
  • ২৫০ বার পঠিত

রৌদ্রময় দিন সবার বাড়িতেই ঈদের জন্য জামা কাপড় কাঁচা কুঁচি চলতেছে। তেমনি আনিসের বাড়িতেও চলছে একই কাঁজ। প্রচন্ড রোদ্রে আনিসের মা উঠানে বসে বাড়ির সবার কাপড় একটা একটা করে হুইল পাউডার মেশানো পানিতে ভেজাচ্ছে।
আনিস ঘরের ভেতরে অঘোর ঘোরে ঘুমিয়ে আছে চিকনা চকনা দেহ যেন তাল পাতার সেপাই। হঠাৎই তাঁর ঘুম ভেঙে গেলো আর মনে পড়ল আজ তো ওর সাথের বাহিনী গুলো মাছ ধরতে যাবে তাঁর বাহিনী মানে তাঁর বন্ধুরা মেহেদী, কাউসার, জনি,এরাই। বিছানা ছেড়ে বাহিরে গিয়ে দেখল তাঁর মা কাঁপড় ভেজাচ্ছে।আনিসের মা পিছনে তাঁকিয়ে বলল কিরে আরেকটু ঘুমাবি না। আনিস ঘুম ঘুম চোখে বলল এখন এগারোটা বাজে এখনো ঘুমাতে বলছো।আনিসের মা এবার রাগী স্বরে বলল রোজতো বাপজান বারোটা বাজলেও ওঠো না আজকে যে এত সকালে উঠেলে। আনিস এবার একটু মৃদু স্বরে বলল না মানে আজকে মাছ ধরতে যাবো। আনিসের মা এবারো রাগী কন্ঠে বলল তোরে যাওয়া লাগবে না।আনিস বললো আদুরে গলায় বললো না মা যাই। মায়ের মন কি আর ধরে রাখতে পারে আনিসের মা রাজী হয়ে গেল আর বলল তাহলে ভাত খেয়ে যা। কে শোনে কার কথা উঠানের পাশে দড়িতে একটি জামা আর গামছা ঝোলানো ছিলো তা নিয়ে দে দৌড়। আনিসের মা পেছন থেকে গলা হাঁকিয়ে বলে যাচ্ছে ওটা তোর জামা না ওটা তোর বাবার জামা।আনিস তাঁর মায়ে কথা না শুনেই চট বগলে উঠেছে। রাস্তায় গিয়েই মেহেদী, কাউসার,জনির সাথে দেখা আনিসের।আানিস হাঁফাতে হাঁফাতে বলল কিরে তোরা যাবি না।মেহেদী বলল হুম যাবো তোর জামাটা পরে নে প্রচন্ড রৌদ তাঁর ভেতরে আবার ক্ষেত টা পাড়ি দিতে হবে। আনিস হাতের ভেতর থেকে জামা বের করে পড়তে শুরু করল। আনিস জামাটা পরে অবাক দৃষ্টিতে বলল এমা এটাতো বাবার জামা।
আনিস হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না। আনিস মুখটা হাসি হাসি করে মেহেদীর দিকে মুখ করে বলল এজন্য মা জোরে চিৎকার করে কি যেন বলছিল মনে হয় জামার কথাই বলছিল।এদিকে ওরা তিনজন হাসতে হাসতে শেষ জনি তো আবার পেট ধরে বসে পড়েছে। মেহেদী হাসতে হাসতে বলল যা বাড়িতে গিয়ে জামা পাল্টিয়ে আই।আনিস মুখটা ভার করে বলল আমি বাড়িতে গেলে আমাকে আর মা আসতেই দিবে না আর একদিন বাবার জামা গাঁয়ে দিলে কি বা হবে। কাউসার হাসি হাসি মুখ করে বলল তোর ভালো আামারে ভালো তুই এভাবে গেলে চল এভাবেই চল নদীতে। জনি কাউসারের কথায় সাঁই দিয়ে বলল এভাবেই চল না হলে একে বারে দেরী হয়ে যাবে।এই বলে চার জন ক্ষেতের ভেতরের রাস্তা দিয়ে হাঁটা শুরু করল। চারিদিকে পাঠের ক্ষেত হালকা বতাসে হেলছে দুলছে মাঝে মাঝে কিছু মানুষ ধানের চারা দেওয়ার জন্য জমি কোপাচ্ছে কোঁদাল দিয়ে।কিছুক্ষণ যেতেই মেহেদী দেখতে পেল আনিসের বড় কাকা শিহাব ধানের চারা দেওয়ার জন্য জমি কোপাচ্ছিল মেহেদী আনিস কে বলল এই আনিস তুই গামছা দিয়ে মুখ ঢাঁক তোর বড় চাচা।( আনিসের বাবারা দুই ভাই শিহাব , সুমন) আনিস ভয়ে ভয়ে তাঁর মুখ গামছা দিয়ে পেচিয়ে নিল।কিন্তু ওইযে বলে যে বলে যেকানে বাঘের সেখানে শন্ধ্যা হয়। আনিসের কাকা দেখে ফেলল আনিস কে আর বলল কিরে সুমন তুই না আমার সাথে জমি কোপাচ্ছিলি আবার ওই ছোট ছোট ছেলেপুলেদের সাথে কোথায় যাচ্ছিস।আনিসের ভয়ে চাপে মুখ বন্ধ।আনিসের বাবা পাশের পাটের ক্ষেতের ভেতরে জিরাচ্ছিল বাহিরে এসে বলল না ভাই আমিতো এখানেই। আনিসের বড় কাকা অবাক দৃষ্টিতে বলল তাহলে তোর জামা গায়ে আবার মুখে তোর গমছা পেচানো ওটা কে।আনিসের বাবা আনিসের কাছাকাছি এসেই মুখের গামছা খুলে ফেলল আর অবাক দৃষ্টিতে বলল তুই। আনিসেরতো ভয়ের চোটে মুখের ঘাম বেরোনো শুরু করে দিয়েছে চারপাশে তাকিয়ে দেখছে বদমাইশ গুলো সব উধাও। আনিসের বাবা আনিসের বড় কাকাকে বলল দেখো ভাই কে আমার জামা পড়ে। আনিসের বড় কাকা হাসতে হাসতে বলল কই যাস তোর বাবার জামা পড়ে। আনিস মুখটা ছোট করে বলল মাছ ধরতে যাচ্ছিলাম।আনিসের বাবা হাসি হাসি মুখ করে বলল আমার জামা তোর কাছে এলো কি করে। আনিস তখন এক চিলতে হাসি নিয়ে বাড়ি থাকে মাছ ধরতে আসার কাহিনী টা বলল। আনিসের বাবা ধমকের সুরে বলল মাছ ধরতে যাওয়া লাগবে না রৌদ্রের ভেতরে মাছ ধরতে যাবে আমি আর তোর কাকা যতক্ষণ পর্যন্ত জমি কোপাচ্ছি ততক্ষণ পর্যন্ত পাশের পাঠের ক্ষেতটার আইলে গামছা মুড়ি দিয়ে বসে থাকবি।আনিস বাধ্য ছেলের মতো গামছা মুড়ি দিয়ে বসে থাকল।

(সমাপ্ত)

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..