কুলাউড়া প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ‘ই-প্রশিক্ষণ প্লাটফর্ম’-এ প্রশিক্ষণ নেওয়া খামারি ও কমিউনিটি বেইজড ভেটেরিনারি সার্ভিসের সুফলভোগীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকারের সভাপতিত্বে ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিঠুন সরকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।
মতবিনিময় সভায় প্রায় ২০ জন সুফলভোগী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, জাতির জনকের সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। মানবসম্পদ উন্নয়নে ও দক্ষ প্রাণিসম্পদ উদ্যোক্তা-খামারি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ২০২১ সালে দেশের মধ্যে প্রথম কুলাউড়ায় ‘ই-প্রশিক্ষণ প্লাটফর্ম’র অংশ হিসেবে ‘ওয়েব অ্যাপ্লিক্যাশন’ এবং এর ‘অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস’ তৈরি করে খামারিদের প্রশিক্ষণের ডিজিটাল উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ডিজিটাল এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য প্রশিক্ষণার্থীদের আহবান জানান জেলা প্রশাসক।
কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী জানান, ‘ই-প্রশিক্ষণ প্লাটফর্ম’র ‘ওয়েব অ্যাপ্লিক্যাশন’ এবং ‘অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস’র মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে তারা বেশ উপকৃত হচ্ছেন। প্রাণিসম্পদ বিষয়ক বিনামূল্যে কোর্স করে তাদের খামার ব্যবস্থাপনাকে লাভজনক করে তোলার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
এ উদ্যোগ ব্যাপকভাবে প্রসারিত হলে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব বলে জানান তারা।

মতবিনিময় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার জানান, এ উদ্যোগের মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিরা উপকৃত হবে। তারা ঘরে বসে ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে দক্ষ হয়ে উঠতে পারবেন। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সর্বদা মানুষের পাশে থেকে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এই উদ্যোগ এরই উদাহরণ।
এমন উদ্যোগ বাংলাদেশে এই প্রথম জানিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিঠুন সরকার জানান, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর, উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের সম্মিলিত উদ্যোগে ২০২১ সালে চালু করা হয়েছে এই সেবা। চালুর পরপরই ব্যাপক সাড়া মেলেছে। ইতোমধ্যে ২৫ জন খামারি বিনামূল্যে এই পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুলাউড়ায় পারিবারিক খামারিসহ প্রায় ২৫০০০ হাজার খামারি রয়েছেন। তাদের মধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল কর্তৃক বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ খামারিকে প্রতি বছর স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও বৃহৎ একটি অংশ রয়ে যায় প্রশিক্ষণের আওতা বহির্ভূত।
খামারিরা প্রশিক্ষণের অভাবে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত হন। অনেক ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জানার অভাবে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হন। তাদের দক্ষ করে তুলতে ও মানবসম্পদ উন্নয়নে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।