বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারে সদ্য জন্ম নেয়া শরীর জোড়া লাগানো জমজ কন্যাশিশুদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারী হাসপাতাল থেকে মৌলভীবাজার ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে। গতকাল শনিবার মৌলভীবাজার বেসরকারী হাসপাতালে শরীর জোড়া লাগানো জমজ কন্যাশিশুদের দেখতে যান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া। শিশুদের পিতার সাথে কথা বলে শরীর জোড়া লাগানো জমজ কন্যা ও তাদের মায়ের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। পুলিশ সুপার উন্নত চিকিৎসার জন্য জমজ কন্যাশিশুদের পিতা জুয়েল আহমদ হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান, হাসান মোহাম্মদ নাছের রিকাবদার, এ বি এম মোজাহিদুল ইসলাম,ডিআইও (ওয়ান) মোহাম্মদ আবু তাহেরসহ জেলা পুলিশের অন্য কর্মকর্তা, কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জমজকন্যাদের দরিদ্র পিতা জুয়েল আহমদ বলেন, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে শিশু দুটিকে আলাদা করা সম্ভব। যা এই হাসপাতালে সম্ভব নয়। তবে,উন্নত চিকিৎসার জন্য বড় অংকের টাকা ব্যয় হবে। নিজের স্বল্প আয় দিয়ে এ ব্যয় বহন করা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। শরীর জোড়া লাগানো জমজকন্যা শিশুদের কথা শুনে পুলিশ সুপার এসে দেখে গেছেন। আর্থিক সহায়তা করেছেন। আজ বেসরকারী হাসপাতাল থেকে মৌলভীবাজার ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামীম আলম বলেন,আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখতে হবে বাচ্চা দুটির হৃৎপিন্ড এবং পাকস্থলি আলাদা কি না। এগুলো আলাদা হলে অস্ত্রোপাচার করে তাদের পৃথক করা সম্ভব। তবে, যত দ্রুত সম্ভব ঢাকায় জাতীয় শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন তিনি।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, গনমাধ্যমে সংবাদটি দেখে পরিবারের সাথে দেখা করেছি। তাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে এই দরিদ্র পরিবারের পক্ষে খরচ বহন করা সম্ভব নয়। জেলা পুলিশের পক্ষে সামান্য আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। একইসাথে সমাজের দানশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে মানবিক সহায়তায় এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
গত ৫ মে রাতে মৌলভীবাজার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক ডা. ফারজানা হক পর্ণা ও অ্যানেসথেসিষ্ট ডা. বি এস এম এরশাদ এর তত্ত্বাবধানে সিজারের মাধ্যমে শরীর জোড়া লাগানো দুই কন্যা শিশুর জন্ম হয়। জন্ম নেয়া দুই নবজাতকের বুক থেকে পেট একত্রে জোড়া লাগানো। তবে, তাদের হাত, পা, মুখ ও মাথা আলাদা। জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সিঙ্গরাউলি গ্রামের জুয়েল মিয়া ও তাকলিমা দম্পতির পরিবারে জন্ম নেয় এ দুই কন্যা শিশু। জুয়েল আহমদ পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।