মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১২:১০ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি: বড়লেখার পাকশাইল আইডিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে গোপনে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা চলছে। কমিটি বাতিলের দাবিতে ভুক্তভোগীরা ২৯ জানুয়ারি সিলেট শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি ৩০ জানুয়ারি বড়লেখা ইউএনও ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য লোকমান উদ্দিন, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন, পাকশাইল আইডিয়াল হাই স্কুলের সাবেক সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আসুক উদ্দিন, দাতা সদস্য ছাদ উদ্দিন, সাবেক শিক্ষানুরাগী সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাহফুজসহ শতাধিক এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পাকশাইল আইডিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগসাজশে অতি গোপনে গত ২৫ জানুয়ারি পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচনের সভা এবং ম্যানেজিং কমিট গঠনের প্রক্রয়া সম্পন্ন করেন। প্রধান শিক্ষক নিজের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার বিষয়টি গোপন রেখে পছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি নির্বাচিত করেন। তফশিলের বিষয়টি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, দাতা, সাধারণ অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরাও জানতেন না। ২৫ জানুয়ারি সভাপতি নির্বাচনের সভা চলাকালীন খবর পেয়ে বর্নি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্যসহ এলাকার মুরব্বিয়ানগণ স্কুলে উপস্থিত হয়ে প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এএসএম রাশেদুজ্জামান বিন হাফিজকে মৌখিকভাবে বিষয়টি অবগত করে জানান, প্রধান শিক্ষক তফশিল ঘোষণার বিষয়টি গোপন রাখেন। এলাকার কেউ এই বিষয়টি জানতেন না। বিধিমোতাবেক মনোনয়নপত্র বিক্রি, গ্রহণ, যাচাই-বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দ কোনটিই করা হয়নি। বিধি মোতাবেক না হওয়ায় যোগসাজসের এই পকেট কমিটির পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ না করতে প্রিসাইডিং অফিসারকে অনুরোধ জানালেও এলাকাবাসীর দাবি উপেক্ষা করে তিনি কমিটি গঠন করেন।
এদিকে অতি গোপনে এবং অনিয়মের মাধ্যমে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন করায় গত ২৭ জানুয়ারি পাকশাইল এলাকাবাসী স্থানীয় খেলার মাঠে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। সভা থেকে এই কমিটিকে অবৈধ ও বে-আইনী বলে তা বিলুপ্তের দাবি জানানো হয়।
প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এএসএম রাশেদুজ্জামান বিন হাফিজ বলেন, ‘তফশিলের পর প্রধান শিক্ষককে ফলাও করে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সবাইকে জানানোর জন্য বলা হয়। তিনি করেছেন কি-না তা জানি না। ১৯ জানুয়ারি মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের তারিখ নির্ধারিত ছিল। নির্বাচনের পদগুলোতে একক প্রার্থী থাকায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়। বিধিমোতাবেক তিনি সবকিছু করেছেন বলে দাবী করেন।’
ইউপি সদস্য লোকমান উদ্দিন বলেন, ‘অত্যন্ত গোপনে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কমিটি করায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজানা বিরাজ করছে। পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার বিষয়টি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, দাতা, অভিভাবক শ্রেণির ভোটার এবং শিক্ষার্থীরাও জানতেন না। মূলত প্রধান শিক্ষক হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতেই নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার বিষয়টি গোপন রেখে পছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি নির্বাচিত করেন। কমিটি বাতিলের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। আশা করছি কর্তৃপক্ষ অবৈধ এই পকেট কমিটি বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের ব্যবস্থা নিবেন।’ লোকমান উদ্দিন আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে এলাকাবাসীর দাবির প্রতি একাত্ত¡তা পোষণ করে একজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাওলাদার আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচার-প্রচারণায় অনিয়ম হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, ‘এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন।