1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০১ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র : মামলা না নিয়ে ধর্ষিতাকে পাঠাল ধর্ষকের বাড়ি, অতঃপর…

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩
  • ৮০ বার পঠিত

বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখায় অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে (১৭) উদ্ধারের পর মামলা না নিয়ে সালিশে নিষ্পত্তির নামে উল্টো ধর্ষণকারীকে অন্যত্র বিয়ের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রবিউল হক ও এএসআই তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। অথচ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ ধরণের ঘটনার আপোষ-মীমাংসার কোন সুযোগ নেই। ধর্ষণে অন্তঃস্বত্তা হতদরিদ্র পরিবারের কিশোরী ও তার মা হামিদা বেগম এখন ন্যায় বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও তার মায়ের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরীর বাড়ি উপজেলার নতুন সায়পুর গ্রামে। অপহরণকারী যুবক জামিল আহমদ (২১) ওই গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। গত ৭ মে ওই কিশোরী অপহরণের শিকার হয়। এরপর কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে ওই যুবক। ঘটনার এক সপ্তাহ পর মায়ের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কিশোরী ও অপহরণকারী যুবককে ১৪ মে উদ্ধার করেন শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই তাজুল ইসলাম। ওইদিন তাদেরকে আদালতে সোপর্দ না করে রাতে তিনি তদন্ত কেন্দ্রে সমঝোতা বৈঠক করেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউপি সদস্য মখসুদ আহমদ রানা ও নারী ইউপি সদস্য নাসিমা বেগম। বৈঠকে কিশোরীকে অপহরণকারী ও ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবকের সাথে বিয়ের সিদ্ধান্ত দিয়ে অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে ১৫ মে বিয়ের পরিবর্তে উল্টো নির্যাতনের শিকার হয়ে ওই কিশোরী তার বাবার বাড়িতে ফিরে যায়। এরপর বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে যান ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য। থানায় ধর্ষণ মামলার প্রস্তুতি নিলে খবর পেয়ে সেখান থেকে তাদের আপোষের কথা বলে ফিরিয়ে নেন এএসআই তাজুল ইসলাম। ঘটনাটি আপোষে শেষ করে দেবেন বলে তাদের ঘুরাতে থাকেন। এরমধ্যে ওই যুবক অন্যত্র বিয়ে করে ফেলে। এ অবস্থায় ধর্ষণের শিকার কিশোরী পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে গত ১৬ আদালতে মামলা করতে যায়। সেখানে আসামী দ্বারা মুহুরি প্রভাবিত হয়ে ধর্ষণ ও অপহরণের মামলার পরিবর্তে যৌতুক দাবী ও নারী নির্যাতনের মামলা লিখে দিয়েছে। কিশোরী না বুঝে এতে স্বাক্ষর করে। পুলিশ তদন্তে গেলে বিষয়টি ধরা পড়ে। এমন অভিযোগ অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও তার মায়ের। এখন ন্যায় বিচারের জন্য তারা প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়েকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছে জামিল। ফাঁড়িতে অভিযোগ দিলে তাজুল স্যার উদ্ধার করে মেয়েকে আমার কাছে না দিয়ে অপহরণ ও ধর্ষণকারীর সাথে পাঠিয়ে দেন। এরপর ঘটনা আপোষ হয়েছে জানিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন’। স্বাক্ষর না দেওয়ায় আমাকে ফাঁড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘তুমি কোনদিন ফাঁড়িতে আসবা না, আমার সামনেও পড়বা না’। অভিযোগের কপিটা চাইলে ওঠাও না দিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরদিন জামিল ও তার পরিবার আমার মেয়েকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর থানায় ধর্ষণ মামলা করতে গেলে তাজুল স্যার খবর পেয়ে আমাকে আপোষ করে দেবেন বলে মামলা করতে না বলে ঘুরাতে থাকেন। এই ফাঁকে জামিল অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করে ফেলে। কোর্টে মামলা করতে গেলে মরির ভুল মামলা লিখে দিয়েছে। আমি পড়ালেখা জানি-না, মরির লিখে দিয়ে স্বাক্ষর দিতে বলায় আমার মেয়ে তাতে স্বাক্ষর করে। মৌলভীবাজারে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে গেলে আমার মেয়ে অন্তঃস্বত্তা বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। এখন মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায়। কোথাও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।’

তদন্ত কেন্দ্রে ওই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মখসুদ আহমদ রানা ও মহিলা ইউপি সদস্য নাসিমা বেগম। ইউপি সদস্য মখসুদ আহমদ রানা বলেন, ঘটনাটি আমি জানতাম না। তদন্ত কেন্দ্র থেকে আমাকে ফোন দিয়ে নেওয়া হয়। এখানে (তদন্ত কেন্দ্রে) যা সিদ্ধান্ত হয়েছে পুলিশই নিয়েছে। আমরা কোন কথা বলিনি। শুধু উপস্থিত ছিলাম। ইউপি সদস্য নাসিমা বেগম বলেন, ‘পুলিশ উভয় পক্ষের সাথে কি কথা বলেছে ওঠা আমরা শুনিনি। আমি পাশের রুমে ছিলাম। আলোচনা শেষে শুধু জানানো হয় মেয়ে-ছেলের বিয়ে হবে। বিয়ে যেদিন হওয়ার কথা ছিল সেদিন বিয়ে হয়নি। শুনেছি আগের রাতে মেয়েকে নির্যাতন করা হয়। তাই কৌশলে পালিয়ে সে মায়ের কাছে চলে যায়।’

অভিযোগের বিষয়ে শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মৌলভীবাজারে কোর্টে স্বাক্ষী দিতে গিয়েছি। কিশোরীর ঘটনাটি আই.সি স্যার সমাধান করে দিয়েছেন। তার কাছ থেকে বিষয়টি জেনে নিতে বলেন।’

শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ ইন্সপেক্টর রবিউল হক বলেন, ‘মেয়ে ও ছেলের অভিভাবকরা বিয়ে দেওয়ার সমঝোতা করায় পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। পরে মোহরানা নিয়ে ঝামেলা হয় বলে শুনেছেন।’

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..