1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

জুড়ীতে কমছে কমলার উৎপাদন, চাষ থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন চাষিরা!

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৮৫ বার পঠিত

আবিদ হোসাইন জুড়ী: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলে চাষাবাদ হয় নাগপুরী ও খাশি জাতের কমলা। রয়েছে ছোট বড় শতাধিক বাগান। চলছে বাগান থেকে কমলা হার্ভেস্টর মৌসুম তবুও হতাশ জুড়ীর কমলা চাষীরা। দিন দিন কমে আসছে কমলার উৎপাদন।

বাগান গুলোতে অজানা নানান রোগ ও গান্ধী পোকা মথের আক্রমণে ভালো ফলন হলেও রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু কিছু কৃষক পোকামাকড় নিধনে “সেক্সফরমুনফাঁক ও আলোক ফাঁদ” পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে অন্যান্য পোকামাকড় দমন করা গেলেও গান্ধী পোকা ও মথ দমন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এবারে আশানুরূপ ফলন পাওয়া সম্ভব হবে না বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের লালছড়া, রুপাছড়া, শুকনাছড়া, লাঠিটিলা, লাঠিছড়া, হায়াছড়া, কচুরগুল ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের বিনোদপুর, দূর্গাপুর, জামকান্দি, ছোট ধামাই এসব গ্রামে রয়েছে কমলার বাগান। পোকামাকড় থেকে রক্ষা করে সঠিকভাবে পরিচর্যায় এক একটি বাগান থেকে প্রতি বছর ২-৩ লাক্ষ টাকার ফলন বাজারজাত করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন চাষিরা। দেশে লেবুজাতীয় ফসলের সংকট ও ভিটামিন (সি) মোকাবেলা করতে ও বিদেশ থেকে কমলা আমদানি রোধ করতে অর্থাৎ, কমলা উৎপাদনে দেশে স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে সঠিক নিয়ম পর্যাবেক্ষণ করে উৎপাদনে বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৯৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯৬ টি কমলা বাগান রয়েছে। এর মধ্যে গোয়ালবাড়ীতে ৬২ হেক্টর। অত্রাঞ্চলের অধিকাংশ কমলা খাঁসি ও নাগপুরি জাতের আবাদ হচ্ছে। সম্প্রতি জুড়ীতে নতুন দুই জাত কমলা উদ্ভাবন করা হয়েছে বারি-১ ও বারি-৩ জাতের। কিছু কিছু বাগানে এবছর নতুন করে ফল আসতে শুরু হয়েছে।

রুপাছড়া গ্রামের তোফায়েল আহমদ বলেন, এবার লক্ষ্য ছিল লক্ষাধীক টাকার কমলা বিক্রি করার। কিন্তু বর্তমানে কমলা চাষ এখন ঝুঁকিপূর্ণ এবং আপত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর মূল কারণ হল কমলায় একটু রস হওয়ার সাথে সাথে গান্ধি পোকার আক্রমণ শুরু হয়। তাঁর পর একটু পরিপক্ব হওয়ার আগেই এক ধরনের মথ (প্রজাতি) মারাত্মক ভাবে আক্রমণ করে। এই পোকা গুলো কমলার ভেতরের একটু রস খেয়ে ফেলার কারণে কমলা দ্রুত গাছ থেকে ঝরে যায়। আমি আশাবাদী এই সমস্যার সমধান করতে পারলে  কমলার বিপ্লব ঘটাতে পারবো। অন্যতায় কমলা চাষ ছেড়ে দেওয়ার বিকল্প নেই!

স্থানীয় বাসিন্দা জাবেদ মিয়া তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক কমলার বাগান রয়েছে। আমি প্রায় ৪/৫ বছর ধরে কমলার মৌসুমে শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। গত দুই বছর আগে কমলার ফলন অনেক বেশি ছিল। এখন আগের মতো ফলন হয় না। গাছে কমলা পাকার আগেই ঝরে পড়ে যায়।

গোয়ালবাড়ী ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুরঞ্জিত ধর রনি ও রনি সিংহ বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর কমলার ফলন মোটামোটি স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এবারে কমলায় কিছুটা মাছিপোকা, গান্ধিপোকা ও নতুন করে মথের আক্রমণ রয়েছে। আমরা সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। সম্প্রতি এবিষয় নিয়ে আমাদের কৃষি অধিদপ্তরের গবেষকরা মাঠে কাজ করছে। আশাকরি খুব দ্রুত এই সমস্যা গুলোর সমাধান আসবে। আমরা চাই কমলা চাষের মতো ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পটি ধরে রাখতে। বিগত বছর গুলোতে কমলার উৎপাদন ভালো হলেও শেষ পর্যন্ত ইন্ডিয়ান কমলার তুলনায় আমাদের কমলার মান খুব একটা ভালো হয় না। সেক্ষেত্রে কমলা গাছে জাল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে কমলা গুলো মান ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পটি আসার পর থেকে কিছু সহযোগিতা করা হচ্ছে, সঠিক পরিচর্যা এবং কৃষকদের কার্যকরি প্রদক্ষেপ থাকলে পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম খাঁন সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, আমরা কমলা চাষীদের কথা শুনেছি বাগান গুলো পরিদর্শন করেছি। কমলা চাষিদের দেয়া তথ্য ও সম্প্রতি আমাদের পরিদর্শনে বেশ কিছু সমস্যা নির্ণয় করা হয়েছে। বাগানগুলো পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কিছুটা বেশি। উইপোকা, মিলিবাগ, ফোমিং এর পর বিটল, গান্ধী প্রজাপতির (মত) পোকার আক্রমণ আছেই। আমরা চাষিদেরকে বেশ কিছু কীটনাশক সরবরাহ করেছি। এরমধ্যে কিছু কাজ করেছে এবং কিছু করে নাই। কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউট থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল বাগান গুলো সর্জমিনে পরিদর্শন করেছেন। কারণ এখানে অপরিচিত কিছু মথ আছে যেগুলোকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সেগুলো নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। আশাকরি সে প্রদক্ষেপ গুলো আমরা দ্রুত নেওয়ার চেষ্টা করবো।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..