বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখা উপজেলা তালিমপুর ইউনিয়নের টেকাহালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণয় রঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে ৪ লাখ টাকা ঘুস নিয়ে নৈশপ্রহরী পদে বশির উদ্দিনকে চাকুরী দিয়ে প্রায় দেড় বছর বিনাবেতনে দায়িত্ব পালন করিয়ে অবশেষে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে ভোক্তভোগি নৈশপ্রহরী সম্প্রতি ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার টেকাহালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণয় রঞ্জন দাস নৈশপ্রহরী পদে স্থানীয় হতদরিদ্র বশির উদ্দিনকে চাকুরী দিতে তার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবী করেন। দরকষাকষির এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক ৪ লাখ টাকায় নিয়োগ দিতে সম্মত হন এবং নিজেই তাকে অষ্টম শ্রেণি পাশের জাল সার্টিফিকেট তৈরী করে দেন। ২০২২ সালের ১৪ মে বশির উদ্দিন ওই স্কুলে নৈশপ্রহরী পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক এমপিওভুক্তির জন্য আরো দুই লাখ টাকা দাবি করলে বশির উদ্দিন তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত বশির উদ্দিন প্রায় দেড় বছর বিনা বেতনে নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করেন। এদিন প্রধান শিক্ষন প্রণয় রঞ্জন দাস নৈশপ্রহরী বশির উদ্দিনকে স্কুল থেকে বের করে দেন।
কান্নাজড়িত কন্ঠে নৈশপ্রহরী বশির উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষক প্রণয় রঞ্জন দাস চাকুরী দিতে ৪ লাখ টাকা নেন। স্ত্রীর সোনা গহণা, গরু-ছাগল, গাছপালা বিক্রি করে তাকে টাকা দেওয়ায় তিনি ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে আমাকে নিয়োগ দেন। প্রায় দেড় বছর বিনা বেতনে ডিউটি করার পর এমপিওভুক্তির নামে তিনি আরো দুই লাখ টাকা চান। আমি গরিব মানুষ, আর টাকা দিতে পারবো না বলায় গত বছরের ১২ অক্টোবর তিনি আমার বিছানাপত্র বাহিরে ফেলে আমাকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেন। স্কুলে ঢুকতে দিচ্ছেন না। স্বেচ্ছায় রিজাইন দিতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক প্রণয় রঞ্জন দাস জানান, বশির উদ্দিনের কাগজপত্রে জটিলতা থাকায় তার এমপিও হচ্ছে না। ২০২২ সালের ১৪ মে থেকে ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত বশির উদ্দিন বিনা বেতনে নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালনের, শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ তৈরী করে দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করলেও উৎকোচে চাকুরী দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। কাগজপত্রে জটিলতা থাকলে বাছাইয়ে বাদ দিলেন না কেন, কিভাবে ইন্টারভিউতে ডাকলেন, নির্বাচিত করে নিয়োগপত্র দিলেন এসব প্রশ্নের কোনোটিরই তিনি সদোত্তর দেননি।
ইউএনও নাজরাতুন নাঈম জানান, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। কর্মস্থলে ফিরে অভিযোগটি দেখে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।