1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

গাজা যুদ্ধ ও সরকারের বিরুদ্ধে হাজারো ইসরাইলি রাস্তায়

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫
  • ২৬ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে এবং বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ডানপন্থী শাসক জোটের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের ওপর হামলার প্রতিবাদে হাজার হাজার ইসরাইলি রাস্তায় নেমেছেন।
জেরুসালেম ও তেল আবিবে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক অবরুদ্ধ করা হয়েছে এবং পুলিশ অন্তত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, আগামী দিনে আরো বিক্ষোভ হতে পারে। কারণ আন্দোলন গতি ও শক্তি অর্জন করছে।
নেতানিয়াহুর উদ্যোগে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার প্রচেষ্টা ক্ষোভের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে গাজায় দুই মাস ধরে চলা যুদ্ধবিরতি ভেঙে মারাত্মক বিমান হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত বিক্ষোভকে আরো উস্কে দিয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে হামাসের হাতে আটক ৫৯ জন বন্দীর দুর্দশা উপেক্ষা করছে- যাদের মধ্যে প্রায় ২৪ জন জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্রাদার্স ইন আর্মস আন্দোলনের প্রধান নির্বাহী এইতান হার্জেল বলেছেন, ‘এই সরকার আবারো যুদ্ধ শুরু করেছে, নিজেদের রক্ষা করতে এবং জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে। তারা সব ধরনের বৈধতা হারিয়েছে এবং সম্পূর্ণ ব্যর্থ।’
বুধবার জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর সরকারি বাসভবনের সামনে হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছিল। অনেকেই ইসরাইলি পতাকা ও প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন, যেখানে গাজায় আটক বন্দীদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়। অন্যরা ঢোল বাজিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘বন্দীদের এখনই মুক্তি দিন।’ তারা ইসরাইলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল করে আসছিলেন।
বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক সাবেক সিনিয়র নৌ কর্মকর্তা ওরা নাকাশ পেলেদ হাইফার কাছে একটি কিবুটজ থেকে এসে জেরুজালেমের বাইরে বিক্ষোভকারীদের সাথে রাত কাটিয়ে শহরে প্রবেশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট করেছি… আমাদের সংগঠিত, দৃঢ় এবং মনোযোগী থাকতে হবে। প্রতিবাদ সহিংস হতে পারে না। তবে এটি ভদ্র হওয়ারও প্রয়োজন নেই।’
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘ইসরাইল তুরস্ক নয়, ইসরাইল ইরান নয়’। এসব স্লোগান নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক নীতির বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা এই পদক্ষেপগুলোকে ইসরাইলি গণতন্ত্রের জন্য ‘লাল সংকেত’ বলে অভিহিত করেছেন।
নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি হলো রোনেন বারকে বরখাস্ত করার প্রচেষ্টা। অন্যটি হলো অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারভ-মিয়ারাকে অপসারণের উদ্যোগ, যা অনেকের মতে বেআইনি হতে পারে।
ইসরাইল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের আইন বিশেষজ্ঞ ড. আমির ফুচস বলেন, ‘সরকারের বারকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা থাকলেও প্রশাসনিক আইন মেনে চলতে হবে। যদি স্বার্থের সঙ্ঘাত দেখা দেয়, সুপ্রিম কোর্ট এটি বাতিল করতে পারে।’
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট বর্তমানে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা গোপন নথি ফাঁস করেছে এবং কাতার থেকে অর্থ গ্রহণ করেছে, যা হামাসের তহবিলে সহায়তা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ‘কাতারগেট’ মামলায় নতুন সন্দেহভাজনদের বুধবার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা চলছে এবং দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি কারাবরণ করতে পারেন। ৭৫ বছর বয়সী এই নেতা, যিনি ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসেন এবং ১৭ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, এখন সপ্তাহে দু’বার আদালতে হাজির হচ্ছেন।
বিক্ষোভকারীরা আরো বিচার বিভাগীয় সংস্কারের বিরোধিতা করছেন, যা বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি করবে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর নিরাপত্তা ব্যর্থতার দায় নিয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা পদত্যাগ করলেও, নেতানিয়াহু কোনো দায় স্বীকার করেননি। তিনি একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বানও উপেক্ষা করেছেন।
ফুচস বলেন, ‘নেতানিয়াহু ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে সকল স্বাধীন ও পেশাদার সংস্থাকে দুর্বল করতে চাইছেন। তবে এটি ইসরাইল রাষ্ট্রের স্বার্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বরং কেবল প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের স্বার্থ রক্ষা করছে।’
বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে ‘বামপন্থী ডিপ স্টেট’ কাজ করছে।
তিনি লিখেছেন, ‘আমেরিকা ও ইসরাইলে, যখন কোনো শক্তিশালী ডানপন্থী নেতা নির্বাচনে জয়ী হন, তখন বামপন্থী ডিপ স্টেট বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে জনগণের ইচ্ছাকে ব্যর্থ করতে চায়। তারা কোথাও জয়ী হবে না!’
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ২০২৩ সালে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টকে বরখাস্তের প্রচেষ্টার সময় যে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, বর্তমান আন্দোলন তারই পুনরাবৃত্তি।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..