শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক : অ্যাশেজে হারের সেই দুঃসহ স্মৃতি যেন এখনও তাড়িয়ে বাড়াচ্ছে ইংল্যান্ডের। তা না হলে কেন ফের দলটির টপ অর্ডারের ব্যাটাররা হলেন ব্যর্থ। যাহোক বুধবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটা পর্যায়ে দলটির ত্রাতা হয়ে উঠেন জনি বেয়ারস্টো। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞার লড়িয়ে সেঞ্চুরিও করলেন। যে কারণে দলও পেল রক্ষা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে ইংল্যান্ড করেছে ৬ উইকেটে ২৮৬ রান। বেয়ারস্টো অপরাজিত রয়েছেন ১০৯ রানে।
বুধবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। তখনই ক্রিজে গিয়ে বেয়ারস্টো দেখালেন চোয়াল বদ্ধ প্রতিজ্ঞা। শেষ পর্যন্ত তিনি দিন শেষ করে ইংল্যান্ডকে করলেন রক্ষা। তার টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম ও টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। এটির আগের টেস্টেই সেঞ্চুরি করেন অ্যাশেজের সিডনি টেস্টে, যে সেঞ্চুরিতে কেটেছিল তার তিন বছরের খরা।
এই সিরিজ দিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ডের টেস্ট লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক নামকরণ হয়েছে রিচার্ডস-বোথাম ট্রফি। দুই দেশের কিংবদন্তি ও দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভিভিয়ান রিচার্ডস ও ইয়ান বোথামের প্রতি সম্মান জানিয়ে। খেলা হচ্ছে স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামেই।
বুধবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই অস্বস্তিতে পড়ে ইংল্যান্ড। অভিষিক্ত অ্যালেক্স লিস দ্রুতই ফেরেন সাজঘরে। তৃতীয় ওভারে রোচের ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এদিকে এ পেসারের পরের ওভারেই আউট হন জ্যাক ক্রলি। উইকেটের পেছনে অসাধারণ ক্যাচ নেন জশুয়া দা সিলভা।
তিন নস্বরে নেমে রুট দ্রুত তিনটি বাউন্ডারিতে আভাস দেন পাল্টা আক্রমনের। কিন্তু দুর্দান্ত ডেলিভারিতে তাকে ১৩ রানেই থামান রোচ। পরিবর্ত বোলার জেসন হোল্ডার আক্রমণে এসে আরও চেপে ধরেন ইংলিশদের। আঁটসাঁট লাইন-লেংথ আর সুইংয়ে হাঁসফাঁস করতে থাকেন ব্যাটসম্যানরা। পুরস্কারও পান হোল্ডার। তার আউটসুইঙ্গারে স্লিপে ক্যাচ দেন লরেন্স।
পঞ্চাশের আগে চার উইকেট হারানো দলের হয়ে শুরু হয়ে বেয়ারস্টোর লড়াই। সঙ্গী পান তিনি বেন স্টোকসকে। নিজের সহজাত ব্যাটিং ভুলে উইকেটে পড়ে থাকার চেষ্টা করেন স্টোকস। ইনিংসের প্রথম অর্ধশত রানের জুটি পায় ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এই জুটি ভাঙেন সিলস। তরুণ এই পেসারের সঙ্গে বেশ লড়াই জমে উঠেছিল স্টোকসের। তাতে শেষ হাসি সিলসেরই। টানা দুটি বাউন্ডারির পর আরেকটি বল স্টাম্পে টেনে আনেন স্টোকস। ১৫১ মিনিট ক্রিজে থেকে ৯৫ বলে করেন তিনি ৩৬। এরপরই ইংল্যান্ড পায় দিনের সবচেয়ে বড় জুটি। দলে ফেরা বেন ফোকস খেলেন দায়িত্বশীল ইনিংস। বেয়ারস্টো দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। দুজনের জুটিতে ৯৯ রান আসে ১৭৯ বলে। এরপরই ফোকস এলবডিব্লউ হন ৪২ রানে হোল্ডারের বলে।
ইংল্যান্ড লড়াই চালিয়ে যায় এরপরও। বেয়ারস্টো আর ক্রিস ওকস দিনের শেষ এক ঘণ্টারও বেশি সময় উইকেট হারাতে দেননি আর। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৫৪ রান। বেয়ারস্টো সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১৯০ বলে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৮৬ ওভারে ২৬৮/৬ (লিস ৪, ক্রলি ৮, রুট ১৩, লরেন্স ২০, স্টোকস ৩৬, বেয়ারস্টো ১০৯*, ফোকস ৪২, ওকস ২৪*; রোচ ১৬-২-৭১-২, সিলস ১৯-৫-৬৪-২, হোল্ডার ১৬-৯-১৫-২, জোসেফ ১৯-২-৬৯-০, পেরমল ১৩-৪-৩৫-০, ব্র্যাথওয়েট ৩-১-৭-০)।