1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

পেয়ারা এবং এর পাতার অসাধারণ পুষ্টিগুণ – আফতাব চৌধুরী

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২
  • ১৮৮ বার পঠিত

পেয়ারায় অনেক বেশি ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’ রয়েছে। একটি পেয়ারাতে সমান আকৃতির একটি কমলার ৪ গুণ এবং একটি লেবুর ১০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন ‘বি ২’, ‘কে’, আঁশ, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, কপার, ফোলেট ও ম্যাঙ্গানিজ। এতে কোনো চর্বি নেই। দেশে-বিদেশে রন্ধন প্রক্রিয়ায় এই ফলটি একটি মিষ্টি ও সুস্বাদু উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পেয়ারার জুস একটি শক্তিদায়ক পানীয়। মুখগহŸরের স্বাস্থ্য পরিচর্যায়-দাঁত প্লাক জমা মুখের ভেতরের একটি বড় সমস্যা। পেয়ারা পাতা অ্যান্টিপ্লাক বৈশিষ্ট্যের জন্য খুব কার্যকর। ভেষজবিদরা মুখগহŸরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য কচি পেয়ারা পাতার পেষ্ট ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। এই পাতা প্রদাহনাশক, বেদনানাশক এবং জীবাণুনাশক গুণাগুণের জন্য মাড়ির প্রদাহ, মাড়ি ফোলা, মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে, দাঁতের ব্যথা, মুখের ঘা সারাতে বেশ কার্যকর। পেয়ারা গাছের ডাল দাঁতের মাজন হিসেবে অনেকে ব্যবহার করে থাকেন। প্রতিদিন ১/২ টি পেয়ারা পাতা মুখে নিয়ে চিবোলে ভালো ফল পাবেন। পেয়ারা পাতা দিয়ে তৈরি করতে পারেন মাউথওয়াশ, ৫/৬ টি পেয়ারা পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করে সেই পানি দিয়ে দিনে ১/২ বার কুলি করতে পারেন। হৃৎস্পন্দন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে-নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্তচাপ ও রক্তের লিপিড কমে কারণ পেয়ারাতে উচ্চ পটাশিয়াম, ভিটামিন ‘সি’ এবং দ্রবণীয় আঁশ থাকে। পটাশিয়াম নিয়মিতভাবে লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা খেলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমে। পেয়ারা পাতা ভালো করে শুকিয়ে চা বানিয়ে খেলে কোলেস্টেরল (এইচডিএল), খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) এবং ট্রাইগিøসাইডের মাত্রা কমায়।
পেয়ারা পাতার চা ব্যাকটেরিয়ার কারণে সংঘটিত ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে। কারণ এটার রস ‘ঝঃবঢ়যুষড়পড়পপঁং অঁৎবঁং’ নামক ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। তাই ডায়ারিয়া হলে দিনে কয়েকবার এই চা খেলে পায়খানার পরিমাণ, পেট ব্যথা কমিয়ে সুস্থ করে তুলবে। পেয়ারার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণের জন্য হজম ক্রিয়া ভালো হয়, এটা ব্যকটেরিয়া ও জীবাণুর বৃদ্ধিতে বাধা দেয় এবং এর আঁশ হজম ও মল নিঃসরণকে উন্নত করে।
অনেক বছর ধরে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় চিনা ওষুধে পেয়ারা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হাইপোগøাইসেমিক গুণের প্রভাব ডায়াবেটিস মেলাইটাইসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। উচ্চ আঁশ ও নি¤œগøাইসেমিক ইনডেক্সের পেয়ারা রক্তের সুগার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া যাঁরা ডায়াবেটিসের উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছেন, তারা পেয়ারা পাতার চা খেতে পারেন। কচি পেয়ারা পাতা শুকিয়ে মিহি গুঁেড়া করে কাপ পানিতে ১ চা চামচ দিয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রেখে তারপর ছেঁকে নিয়ে পান করতে পারেন প্রতিদিন।
উচ্চ মাত্রার ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ পেয়ারা দেহকে ঠান্ডা, সর্দি-কাশিসহ অসংখ্য রোগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন ১ টি পেয়ারা বা এর তৈরি স্যালাড বা পেয়ারা পাতা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন।
পেয়ারাতে থাকা বেশ কিছু যৌগিক পদার্থ যেমন লাইকোপিন, ভিটামিন ‘সি’ এবং বেশ কিছু পলিফেনল থাকাতে এর রয়েছে ক্যানসার ও টিউমার বিরোধী গুণাগুণ। এগুলো শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা মুক্ত র‌্যাডিক্যাল নিরপেক্ষ করে দেহকে রক্ষা করে। গবেষকরা বলেন, পেয়ারার রস প্রোস্টেট টিউমারের আকার ছোট করে এবং প্রোস্টেট ক্যানসার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া নিয়মিতভাবে পেয়ারা খেলে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার যেমন-স্তন, মুখের, ত্বকের, পাকস্থলীর, অন্ত্রের এবং ফুসফুসের ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
পেয়ারাতে থাকা উচ্চ মাত্রার ভিটামিন ‘এ’ দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে, কর্নিয়াকে সুস্থ, স্বচ্ছ রাখতে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই খাবারের মাঝে কাঁচা পেয়ারা বা জুস রাখলে তা দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো। পেয়ারার দ্বারা মস্তিস্কের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সুস্থ রাখা সম্ভব। এই সেরা খাবারটি জ্ঞানশক্তিকে উদ্দীপিত করার সাথে সাথে মনোযোগকে তীক্ষè করে। শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ‘সি’ থাকার কারণে এই ফলটি মানসিক ও মস্তিস্কের রক্ত চলাচলকে উন্নত করতে সাহায্য করে। পেয়ারাতে থাকা পটাশিয়াম মস্তিস্কের তড়িৎ পরিবহনে সাহায্য করে যা চিন্তাশক্তি ও স্মরণশক্তিকে বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই ফলটি রাখতে ভুলবেন না।
বিশেষ করে গোলাপি পেয়ারাতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা কোষকে নষ্ট করার জন্য দায়ী ফ্রি র‌্যাডিকেলকে নিরপেক্ষ করে। ফ্রি র‌্যাডিক্যালের জন্য সাধারণত ত্বকে বয়সের চিহ্ন যেমন শুষ্ক, রু², ভাঁজ ও অনুজ্জ্বলতার ছাপ পড়ে। ত্বকের নমনীয়তা ও ইলাস্টিসিটি রক্ষা করে পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন ‘সি’। এছাড়া, পেয়ারা ও এর পাতার সংকোচন বৈশিষ্ট্যের কারণে তা আমাদের ত্বককে উন্নত করে, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে এবং ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ ও ফুসকুড়ি থেকে রক্ষা করে। তাই সুন্দর ত্বক পেতে পেয়ারা খেতে পারেন অথবা কচি পাতা বা পেয়ারা পেস্ট করে মুখে মাখতে পারেন।
থাইরয়েডের জন্য উপকারী কপারের খুব ভালো উৎস হচ্ছে পেয়ারা। এটি আমাদের দেহের খুব গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা দেহের হরমোন ও অর্গান সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর কপার দেহের হরমোন উৎপাদন ও শোষণকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য এবং এর পটাশিয়াম ও শক্তিশালী প্রদাহবিনাশক গুণাগুণ থাইরয়েডের কাজকে উন্নত করতে সহায়তা করে। তাই থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা দূর করার জন্য পেয়ারা ও পেয়ারা পাতাকে খাদ্য তালিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে নিতে হবে। এছাড়াও পেয়ারা দেহের শক্তি বৃদ্ধি ও ওজন কমানোর কাজকে সহজ করে দেয়।

সাংবাদিক-কলামিস্ট।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..