মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
জুড়ী প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী একটি মসজিদ জুড়ী জামে মসজিদ। মসজিদটি জুড়ী শহরের প্রাণকেন্দ্র পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়নের ভবানীগঞ্জ বাজারে অবস্থিত। মসজিদটিতে সানী ইমামের পাশাপাশি মোয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ ২৮ বছরের অধিক সময় হাফেজ আব্দুল মতিন।
তার সুরেলা কণ্ঠের আজানের ধ্বনি উপজেলার প্রত্যেকটি মানুষের কাছে ছিল পরিচিত। দীর্ঘ বছর দায়িত্ব পালন করে ইমামতি পেশা থেকে অশ্রুশিক্ত নয়নে বিদায় নিয়েছেন তিনি। তার বিদায়ে মসজিদ কমিটি এবং মুসল্লিগণ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালের জুন মাসে সানী ইমামের পাশাপাশি মোয়াজ্জিন হিসেবে যোগ দেন হাফেজ আব্দুল মতিন। ওনার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়। মাত্র ৩০ বছর বয়সে এই মসজিদে আসেন তিনি। এরপর দেখতে দেখতে ২৮ বছর ৫ মাস দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন থেকে তিনি হার্ট সমস্যা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভূগছেন। যার জন্য পরিবার থেকে চাপ আসছে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির। বিষয়টি নিয়ে মসজিদ কমিটির সাথে আলোচনা করে গত সোমবার বিদায় নেন তিনি।
হাফেজ আব্দুল মতিনের ২ ছেলে ও মেয়ে রয়েছেন। বড় ছেলে হাফেজ এবং মাওলানা। জুড়ী উপজেলার একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। ছোট ছেলে হাফিজি মাদরাসায় হিফজ বিভাগে পড়ালেখায় আছে। দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদীস শেষ করেছে। ছোট মেয়ে বর্তমানে অধ্যায়নরত রয়েছে।
ওসমান গণী নামের একজন মুসল্লী বলেন, আমার জন্মের আগে হুযুর মসজিদে এসেছিলেন। আমরা ওনার কাছে মক্তবে পড়ালেখা করেছি। আমাদের বড় ভাই-বোন সবাই ওনার কাছে পড়েছি। হুযুরের অসুস্থতার কারণে চলে যাচ্ছেন কিন্তু কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। ওনি অসুস্থ না হলে আরও এখানে থাকতেন। আমরা দোয়া করি আল্লাহ হুযুরকে সুস্থ রাখুন, দীর্ঘ হায়াত দান করুন।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে হুযুর দীর্ঘদিন ছিলেন। আমরা চাইবো হুযুর সুযোগ পেলে আমাদের এখানে বেড়াতে আসবেন। হুযুরের কোন সমস্যা হলে আমারা জনাতে পারলে সমস্যা সমাধানে যথাসাধ্য চেষ্টা করবো।
মসজিদের মোয়াজ্জিন হাফেজ আব্দুল মতিন বলেন, আমার বর্তমান বয়স ৫৮ বছর। দীর্ঘদিন থেকে আমি ডায়াবেটিস, হার্ট ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। পরিবার থেকে বলা হচ্ছিল দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির জন্য।