রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৩ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধক অ্যান্টিবডি বেশি ও দ্রুত তৈরি হয় কাদের শরীরে। নারী না পরুষের? বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ভারতের মুম্বাইয়ের বস্তি ও সাধারণ এলাকায় একটি সেরোলজিক্যাল জরিপ চালানো হয়। ওই সার্ভের ফলাফলে গেছে, যেখানে ৩৫.২ শতাংশ পুরুষের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, সেখানে নারীর দেহে তা হয়েছে ৩৭.১২ শতাংশ। এবং সেটাও বেশ তাড়াতাড়ি। গত বছর মে থেকে অগস্টের মধ্যে দুই দফায় মুম্বাই শহর ও তার লাগোয়া এলাকাগুলিতে ওই সেরোলজিক্যাল সার্ভে চালায় বৃহন্মুম্বই পৌরসভা (বিএমসি), টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর), কস্তুরবা সরকারি হাসপাতাল এবং ফরিদাবাদের ট্রান্সলেশনাল হেল্থ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট (টিএইচএসটিআই)। বৃহন্মুম্বই পৌরসভার ২৪টি ওয়ার্ডের ১০ হাজার ১৯৭ জন বাসিন্দার ওপর সেরোলজিক্যাল সমীক্ষাটি চালানো হয়।
গবেষকদলের এক সদস্য টিএইচএসটিআইয়ের অধ্যাপক সুস্মিতা চৌধুরী বলেন, এই সমীক্ষাটি চালানো হয়েছে গত বছর। কোভিডের প্রথম ঢেউ ওঠার পরপরই। ওই সময় মুম্বাই শহর ও লাগোয়া অঞ্চলগুলির বস্তিপ্রধান ও সাধারণ এলাকাগুলিতে সমীক্ষা চালানো হয় দু’দফায়। মে থেকে জুন এবং জুলাই থেকে অগস্টে। জুলাই-অগস্টের সমীক্ষার ফলাফলেই এই তথ্য মিলেছে।
মুম্বাইয়ের কস্তুরবা সরকারি হাসপাতালের কোভিড টাস্ক ফোর্সের প্রধান অধ্যাপক চিকিৎসক জয়ন্তী শাস্ত্রী জানাচ্ছেন, মে-জুন মাসে যে সেরোলজিক্যাল সার্ভে চালানো হয়েছিল, তাতে কিন্তু বিপরীত তথ্য উঠে এসেছিল। ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল পুরুষদের দেহেই কোভিড রোখার অ্যান্টিবডি বেশি পরিমাণে তৈরি হচ্ছে, বেশি তাড়াতাড়ি। নারীরা ওই সমীক্ষায় এ ব্যাপারে কিছুটা পিছিয়েই ছিলেন।
কেন প্রথম ও দ্বিতীয় দফার সমীক্ষার ফলাফলের এই তারতম্য? সুস্মিতা ও জয়ন্তী দু’জনেরই বক্তব্য, দু’টি সমীক্ষাই চালানো হয়েছিল গত বছর কোভিডের প্রথম ঢেউ ওঠার পরপরই। মে মাসে যখন প্রথম সমীক্ষাটি চালানো হয়, তখন তুলনায় বাইরে বেশি বেরোনোর ফলে পুরুষরাই কোভিডে তুলনায় বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফলে কিছু দিন পর তাদের শরীরে অ্যান্টিবডিও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরে লকডাউন উঠে যাওয়ায় নারীরাও বাড়ির বাইরে বেরতে শুরু করেন। আক্রান্ত পুরুষদের সঙ্গে বাড়িতে থাকতে থাকতেও নারীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়ে যায়। ফলে তাদের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার পরিমাণও বেড়ে যায়।
তবে দু’জনেই এগুলিকে চূড়ান্ত নয়, সম্ভাব্য কারণ বলেই মনে করছেন। তাদের বক্তব্য, এই ধরনের আরও সমীক্ষা চালানো হয়েছে পুনে, ঠানে, নাশিক, নাগপুরেও। তার ফলাফলের উপরেও নজর রাখতে হবে। তখনই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু বলা সম্ভব হতে পারে।