1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪১ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

 ““মৃতেু্্য ও বিয়েতে কি অদ্ভুত মিল”- একটি উর্দূ কবিতার অনুবাদঃ মৃত্যো ও বিয়ের মিল গড়মিল বিষয়ক বেদনা ও আনন্দের মহাকাব্য 

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২৪৫ বার পঠিত

। মুজিবুর রহমান মুজিব।
মৃত্যো মানব জীবনের চীরন্তন ও শাস্বত সত্য অবশ্যম্ভাবী পরিনতি। জগতের সকল প্রানীকেই একদিন মৃতে্যুার স্বাদ গ্রহন করতে হবে। আমাদের মহান স্রষ্টাও প্রতিপালক দোজাহানের খালিক মালিক সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তায়ালা আসমানী কিতাব মহাপবিত্র আল কোরআনে বলেন “কুল্লুন নাফসিন জ্যায়িকাতুল মউত” কালামুল্লা আলকোরআনে আল্লাহ আরো বলেন “আমি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি, এই মাটিতেই মিশে যেতে হবে, একদিন এই মাটি থেকেই উত্তিত হবে”। মৃত্যো প্রসঙ্গেঁ কবি যথাযথই বলেছেন-

“দুনিয়া, এহিত হ্যায় এক
মোসাফির খানা,
যানে হগাজ রুর, কোয়ি আগে, কোয়ি পিছে”।

ইসলাম ধর্ম ছাড়া ও সকল ধর্ম ও ধর্ম্মাবলম্বিগন মৃত্যোর চীরন্তন সত্যকে স্বীকার করেন। এমনকি দ্বান্ধিক বস্তুবাদে বিশ্বাসী নাস্তিকতাবাদী গন ও বস্তুর গুন গত মৌলিক পারিবর্তনে বিশ্বাস করে বলেন “মেটার চ্যেঞ্জেজ ইনটু মেটার”। আলোচ্য কবিতার মর্মানুযায়ী মরা বাড়ী ও বিয়ে বাড়ী উভয় স্থানেই লোক সমাগম হয়, দুই বাড়িতেই মৌলভী সাহেব থাকেন, মরা বাড়ীতে নামাজে জানাজা এবং বিয়ে বাড়িতে আক্দ, মোহরানা, নিকাহনামা ও মোনাজাত পরিচালনায়। মরা বাড়ীতেও লোক সমাগম হয়, বিষন্নবদনে স্বজনদের আর্তনাদ আহাজারি আর করুন কান্নায় মরা বাড়ীতে শোকাহত পরিবেশ বিরাজ করে। পক্ষান্তরে বিয়ে বাড়ীতে লোক সমাগম হয়, আনন্দ উল্লাস হৈ হোল্লাড়, গান বাজনা, খানা পিনা, বিসমিল্লাহ খাঁর আনন্দ শাহনাই, সালামালাইকুম, বেআইন সাহেব বুকে বড় জ্বালা, জাতীয় হালকা নাছ, গান ও হয়। উভয় বাড়িতে এটা হল পরিবেশ গত গড়মিল। শুভ বিবাহ একটি ধর্মীয় বিধি বিধান। মানব সভ্যতার প্রাচীনতম প্রথাও পদ্ধতি। ইসলামি বিধান মোতাবেক মানব জাতির আদি পিতা ও আল্লাহর নাবী আদম (আঃ সঃ) ও বিবি হাওয়ার মধ্যে শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয় স্বয়ং আল্লাহর ইচ্ছাও নির্দেশে ফেরেশতা মারফত। আল্লাহর আইন ইসলামী বিধান মোতাবেক মানুষের মৃত্যোই সব শেষ নয়, বরং মৃত্যোর পর থেকে কব্রি জীবন “আলমে বরজক” থেকে হাসরের ময়দান হয়ে জান্নাত-জাহান্নাম পর্যন্ত অনাদি-অনন্ত সময়। রুহের জগত “আলমে আরওয়া” থেকে হাসরের ময়দান পর্যন্ত মানবাত্বার ক্রম বিকাশের ধারার মধ্যে মানব জীবন টাই ক্ষনস্থায়ী। অনির্ধারিত। একজন মূর্দা যদি মানবজীবনে পূন্যবান হন তা হলে কবর তাকে স্বাগত জানায়, আর গোনাহগার পাপি হলে কবরেই আছে তার কঠিন শাস্তি। খাট-পালং, বালিশ, বিছানা, এসি, ফ্যান বিহিন সাড়ে তিন হাতি ঘরই একজন মুর্দার কবর। এই শ্যামল মাটির কোমল বিছানায় একজন মুর্দাকে দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে স্বজনগন উত্তর ছিরানা করে চীর শয়ানে শুইয়ে দিয়ে চল্লিশ কদম পেরুতে না পেরুতে একজন মুর্দাকে উত্তিত করা হবে। মহান আল্লাহর ফেরেশতার সওয়াল জওয়াব এর সম্মুখীন হবেন “মান রাব্বুকা, মান দীনুকা, তোমার রব কে, তোমান দিন কি, ওয়ামান নাবিয়ুক, তোমার নবী কে, এই ভাবে শুরু হবে হবে একজন মুর্দার পরলৌকিক অনন্ত জীবন। “মৃত্যোও বিয়েতে কি অদ্ভুত মিল” একটি উর্দূ কবিতার অনুবাদ। এ অনুবাদে কবি বলেছেন, “তোমার পালকি উঠলো, আমার খাটিয়া উঠলো। ফুল তোমার উপর ঝরল, ফুল আমার উপরও ঝরল, তফাত শুধু এইটুকু ছিল। তুমি সেজে গেলে, আমাকে সাজিয়ে নিয়ে গেল। তুমি নিজের ঘরে চললে, আমিও নিজের ঘরেই চললাম। তফাত শুধু এইটুকুই ছিল, তুমি নিজেই উঠে গেলে, আমাকে উঠিয়ে নিয়ে গেল। মাহফিল ওখানেও ছিল, লোকজন এখানেও ছিল। তফাত শুধু এইটুকু ছিল ওখানে সবাই হাসছিল, এখানে সবাই কাঁদছে। কাজি ওখানেও ছিল, মৌলভী এখানেও ছিল। দুটো আয়াত তোমার জন্য পড়ল, দুটো আয়াত আমার জন্য পড়ল। তোমার বিয়ে পড়ালো, আমার জানাজা পড়ল। তফাত শুধু এইটুকু ছিল তোমাকে করল আপন, আমাকে করল দাফন”। মৃত্যোও বিয়ে বিষয়ক এই বাস্তব কবিতা খানি খুবই বেদনা ও আনন্দ দায়ক ও বটে। তেইশ লাইনের এই বঙ্গাঁনুবাদে মৃত্যো ও বিবাহ বিষয়ক মহাকাব্যে মানব জীবনের নির্ম্মম সত্য, আনন্দ ও বেদনার কথাও কাহিনী বর্ণিত। চিত্রিত। কবিতার পাঠক মাত্রই আনন্দিত ব্যতিত, আবেগ আপ্লুত। প্রবন্ধকে বলা হয় মানুষের মৌলিক চিন্তা ধারায় ফল ও ফসল আর কবিতা হল একজন কবির হৃদয়ের রক্ত ক্ষরন-বøাড শেড অব হার্ট। অনুবাদক এখানে তার হৃদয়ের রক্ত ক্ষরন ঘটিয়েছেন। কবি অনুবাদক হিসাবে সাফল্য অর্জন করেছেন। ছয় দশক যাবত ভাষা সাহিত্য কলম বাজির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও উর্দূ সাহিত্য ও কাব্যকলা প্রসঙ্গেঁ আমার জ্ঞান ধ্যান ধারনা ও খুবই সিমীত। এ ব্যপারে আমার দৌড় কবি ও সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর, মির্জা আসাদ উল্লাহ গালিব, সাদত হাসান মান্টো এবং কিষন চন্দর এর মধ্যেই সীমা বদ্ধ। আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে পুরাতন ঢাকা ছাড়া কোথাও উর্দূ ভাষা ও সাহিত্যের ব্যবহার ও চর্চানেই। সেই ষাটের দশকের শুরতে কবিতা দিয়েই বাংলা ভাষাও সাহিত্যের ভূবনে প্রবেশের চেষ্টা করি এখন নিয়মিত কবিতার একজন অনুরাগি পাঠক আমি। বাংলা কবিতা আমাকে আবেগ আপ্লুত উজ্জীবিত অনুপ্রানিত করে। মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়ে এখন আমার পড়ন্ত বেলা- জীবন সায়াহ্ণে বাউল স¤্রাট শাহ আব্দুল কবির এর ভাষায় এখন আমার “গাড়ী চলে না, চলে নারে” অবস্থা। ফলতঃ এখন আমার সেই ঘোড় দৌড় আর নেই বরং “ঘরবয়টি” শয্যাশায়ী না হলেও সোফাশায়ী। তবে মহান মালিকের মর্জিতে “মুল্লাহর দৌড় মসজিদ পর্যন্ত চলছে চলবে ইনশাল্লাহ। সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত আমার প্রিয় ও পরিক্ষিত বন্ধু, ব্যবসা বানিজ্যে বিশ্বস্থও পরিচিত নাম ধর্মও মানব প্রেমিক আলহাজ সৈয়দ ফারুক আহমদ ডায়বেটিক বøাড প্রেসার সহ কতেক বার্ধক্য জনিত ব্যাধিতে আক্রান্ত। ফলতঃ বাদ এশা জামাতে নামাজ আদায় শেষে বন্ধুবর সৈয়দ ফারুক আহমদ এর শ্রীমঙ্গল রোডস্থ বাসা বাড়িতে আমাদের পঞ্চ বন্ধু, আল্লাহ ও রাসুল প্রেমে ফানাফিল্লাহ সরকারি কলেজের অবসর প্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর আলহাজ্ব সৈয়দ ফজলুল্লাহ, একাত্তোরের বীর ইঞ্জিনিয়ার কফিল উদ্দিন আহমদ, চা বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট কসনালটেন্ট শহীদুর রাজা এবং এই অধম আমি নৈশ আসরে বসি। এই বয়সে আয়েশি আড্ডা আর বাধ ভাঙ্গা জোয়ার নয় আমরা দেশ সমাজ ও ধর্মালোচনা করি, মুখরোচক নৈশভোজ ও হর হামেশাই হয়। এ ব্যপারে গৃহকতৃ সিলেটি সুকন্যা একান্তই আন্তরিক। সেদিন সন্ধ্যায় প্রিয় বাল্য বন্ধু বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ আলহাজ্ব সৈয়দ ফজলুল্লাহ আমাকে এই কবিতাটি উপহার দিলেন, বল্লেন এখনওত লেখাপড়া কর, এই কবিতা পড়ে জীবনও মৃত্যো নিয়ে কিছু লিখ। আমরা একে অন্যের মধ্যে প্রায়ই উপহার ইপঢৌকন বিনিময় করি। তবে উপহার প্রদানে বন্ধুবর সৈয়দ ফারুক আহমদই ফাস্টক্লাশ ফাষ্ট। বিশাল বেঙ্গঁল সা¤্রাজ্যের মত তাঁর হৃদয় ও বিশাল। প্রসঙ্গঁত উল্লেখ্যঃ আমাদের পিয়ারা নবী “হাদিয়া” পসন্দ করতেন। প্রিয় প্রফেসর ফয়েজ এর অমূল্য ও অপূর্ব উপহার এই কবিতা খানি পেয়ে বার বার পাঠ করলাম। আবেগ আপ্লত হলাম। অশ্রæ বিসর্জন করলাম। অফিসে নিয়ে গেলাম। কম্পিউটার লেমিনেটিং করে কনিষ্ট কলিক মেধাবী কবিকুল ও আরেক ফারুকীর পাঠ শালায় উপহার দিলাম। আবৃত্তি আলোচনা হল। বেলা শেষে আমার বাসগৃহস্থ ব্যক্তি গত ও পারিবারিক পাঠগার “মমতাজ মেমোরিয়াল লাইব্রেরীর কোরআন, হাদীস, ধর্ম পুস্তক গুলি রেখে বাকি সব দান করে দিয়েছি, আইন বিষয়ক পুস্তক সমূহ জেলা এডভোকেট বারে, সাহিত্য, সংস্কৃতি ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রহ্ণ গুলি মৌলভীবাজার পাবলিক লাইব্রেরী, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব, পৌরসভা পরিচালিত প্রবীনাঙ্গঁন পাঠাগার, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ কানুস্মৃতি পাঠাগারে দান করেছি। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে বিগত দিনে মহান স্বাধীনতার “সুবর্ন জয়ন্তী” উপলক্ষে আমার চেম্বার তিন নম্বর বার ভবনে “মুক্তিযুদ্ধ কর্নার” মিনি পাঠাগার স্থাপন করে প্রিয় কনিষ্ট কলিগ গ্রহ্ণ সুহৃদ এডভোকেট আব্দুছ ছালাম ফারুকীকে দেক ভালের দায়িত্ব পালন শেষে ইভিনিং আওয়ারে পাঠ চক্রের কাজ চলে। কবিতা আবৃত্তি ও পাঠ হাদিসী আলোচনাই প্রাধান্য পায়। আমি এই পাঠ চক্রের নাম দিয়েছি “ফারুকের পাঠশালা”। এডভোকেট আব্দুছ ছালাম সততা ও সুনামের সাথে নিজ ইউনিয়ন আপার কাগাবালার চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করে প্রশংসিত হয়েছেন। আমি চার মেয়াদে জেলা বারের সভাপতি ছিলাম। এক মেয়াদে তিনি জেলাবার কার্য্য নির্বাহী কমিটির নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। যখন যেখানে থাকেন সেখানে দায়িত্ব পালনে আন্তরিক কর্তব্য পরায়ন। ছুন্নাতি, নিয়মিত নামাজি পাক্কা ইমানদার সাচ্চা মুসলমান। মুক্ত মনের মুক্ত মানুষ। কোন নয় ছয়, ছক্কা পাঞ্জা, ধান্দাবাজিতে নেই। আজ কালকার সুবিধাবাদি সমাজে উচন্ট বেঈমান, মুনাফেক, লেচ্ছর ও খচ্চরের অভাব নেই। তাই আমি তাকে মাঝে মধ্যে মায়ায় মমতায় সৌদিষ্টাইলে আল ফারুক বলে ডাকি। জ্ঞান চর্চা, জ্ঞানার্জন, মুক্ত বুদ্ধির আন্দোলনকে বেগাবান জ্ঞান-বিজ্ঞান, ভিত্তিক সমাজ বিনির্মানের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনুরোধ জানাই। প্রিয় কনিষ্ট কলিগ ফারুকের পাঠশালার কর্নধার এডভোকেট আব্দুছ ছালাম ফারুকী মৃত্যোও বিবাহ বিষয় কবিতার মূল্যায়ন এবং এই সংক্রান্তে গদ্যালোচনার বিনীত দাবী জানান। মৃত্যো ও বিবাহ বিষয়ক একটি উর্দূ কবিতার বঙ্গাঁনুবাদ এই কবিতা। এই কবিতার কবিকে কিংবা অনুবাদককে তা উল্লেখ নেই। মূল লেখক ও অনুবাদককে একজন পাঠক হিসাবে আমি অভিভাধন অভিনন্দন জানাই। বন্ধুবর প্রফেসর আলহাজ্ব সৈয়দ ফজলুল্লাহকে এমন এক খানি তোফা প্রদানের জন্য আন্তরিক মোবারক বাদ। ভাষা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মতে “ঞযব ঞবৎস টৎফঁ রং উবৎরনবফ ভৎড়স ঃযব ঞবৎস টৎফর” উর্দি শব্দ থেকে উর্দূ-র উৎপত্তি বলে অনেকে মনে করেন। প্রাচীন ও আধুনিক ভারতের রাজধানী দিল্লীর আশে পাশে সেনা ছাউনিতে বসবাসরত হিন্দুস্থানী সৈন্যগন এই হিন্দুস্থানী ভাষায় কথা বলতেন। হিন্দুস্থানী সৈন্য বাহিনীর স্বাভাবিক পোষাক “উর্দি” থেকে “উর্দূ” শব্দের উৎপত্তি। উর্দূকে হিন্দুস্থানী ভাষা বলা হলেও উর্র্দূ সর্ব ভারতীয় ভাষা বা রাজ ভাষা ছিল না। ভাষা হিসাবে উর্দূর সঙ্গেঁ ভারতের হিন্দু মুসলমানের কোন ধর্মগত সম্পর্ক ছিল না। দশম শতাব্দি পর্যন্ত দিল্লীর রাজ পুত রাজা ও শাসক সম্প্রদায় এর রাজ ভাষা উর্দূ হওয়ার কথা নয়। দিল্লীর শেষ রাজপুত রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহান উর্দূ নয় হিন্দী ভাষী ছিলেন। রাজপুতদের পর দিল্লী সালতানাত কুতুব উদ্দিন আইবেক থেকে ইব্রাহিম খাঁন লোদী পর্য্যন্ত ভারতের রাজ ভাষা উর্দূ ছিল না। তখন ফার্সি প্রাধান্য পেয়েছে। দশম শতাব্দীতে মহাদেশীয় ভাষা হিসাবে ফার্সির প্রসার ঘটতে থাকে। এই শতাব্দীর খ্যাতিমান মহাকবি ইরানের আবুল কাশেম ফেরদৌসি ফার্সি ভাষায় মহাকাব্য ক্লাসিক গ্রহ্ণ শাহনামা রচনা করে এখন পর্যন্ত বিশ্ব কাব্য সাহিত্যের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। পঞ্চদশ শতাব্দীর শুরুতে মোগল বীর বাবর পানিপথের প্রথম যুদ্ধে দিল্লীর শেষ সুলতান ইব্রাহিম খাঁন লোদীকে পরাজিত করে ভারতে মুঘল স¤্রাজ্য প্রতিষ্টা করেন। মুঘল ভারতের সর্ব ভারতীয় রাজ ভাষা ছিল ফার্সি, উর্দূ নয়। মুঘল শাহজাদা দারা শিকো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম গ্রহ্ণ উপনিষেদ ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করে ছিলেন। দিল্লীর শেষ মুঘল স¤্রাট আবু জাফর সিরাজ উদ্দীন মোহাম্মদ বাহাদুর শাহ রাজ্য শাসনের চাইতে শিল্প সংস্কৃতি ও কাব্য চর্চায় অধিকতর উৎসাহী ছিলেন। স¤্রাট বাহাদুর শাহ উর্দূ, ফার্সি, পাঞ্জাবি ও ব্রেজ ভাষায় কবিতা রচনা করে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। মোহাম্মদ হোসেন আজাদের মতে “কবিতার সঙ্গে পাগলের মতে প্রেম ছিল জাফরের”। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ হিসাবে খ্যাত সর্ব ভারত ব্যাপী ভারতের সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে বৃটিশ বেনিয়াদের কাছে পরাজয়ের পর দিল্লীর লাল কেল্লায় বন্দী বাহাদুর শাহ ঐতিহাসিক দিল্লীর লাল কেল্লার দেয়ালে কাঠ কয়লা দিয়ে লিখেন মুঘলট্রেজেডির মহাকাব্য “কিতনাবদ নসিব হায়তু জাফর দাফন কে লিয়ে, দূ’গজ জমিনভি মিলানাসাকে কুওয়ে ইয়ারমে”। অসভ্য ইংরেজরা প্রহসনের বিচারে তাকে বার্মার রেঙ্গুঁনে নির্বাসনে পাঠায়। ভারত স¤্রাটকে ভারতের মাটিতে কবর দিতে দেয়নি। এই নিয়ে দুই হাজার বারো সালের একুশেরবই মেলায় আমার গবেষনা গ্রহ্ণ “স¤্রাট বাহাদুর শাহ কর্ম্ম ও জীবন দর্শন” দারুন পাঠক প্রিয়তা পেয়েছিল। সাত চল্লিশে ভারত বিভক্তি পাকিস্তানী স্বাধীনতার পর আবার রাষ্ট্রীয় ভাষা আলোচনায় আসে। পাকিস্তানী জাতির কথিত জনক বর্ণিত কায়দে আজম মূলতঃ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষনা করে ছিলেন “টৎফঁ ধহফ টৎফঁ ঝযধষষ নব ঞযব ঝঃধঃব ওধহমধঁধমব ড়ভ চধশরংঃধহ” উর্দূ এবং উর্র্দূই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। বিদ্রোহী বাংলার বীর বাঙ্গাঁলি জিন্নাহ সাহেবের এই ঘোষনা মানেন নি ফল, বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, বাঙ্গাঁলিদের আত্ব বলিদান এবং ভাষার স্বীকৃতি আদায়। উর্দূ কোন সময়ই এ দেশের সংখ্যা গরিষ্ট মানুষের ভাষা ছিল না, করাচীর কতেক মোহাজিরদের ভাষা ছিল। পকিস্তানে পশতু, পাঞ্জাবী, সিন্ধি সহ অন্য ভাষা প্রচলিত ছিল। অবশ্য পাকিস্তানের স্বপ্ন দ্রষ্টা আল্লামা স্যার মোহাম্মদ ইকবাল উর্দূ, আরবি, ফার্সি, পুশতু ভাষায় সুপন্ডিত ছিলেন। কবি ইকবালের “শিকওয়া” এবং জওয়াবে শিকওয়া, “আশরারেরে খুদি” তাঁর পান্ডিত্যের পারিচায়ক। কবি ইকবালের “সারে জাহাছে আচ্ছা, হিন্দুস্থা হামারা” সঙ্গীতটি পাকিস্তানের চীর শত্রæ ভারতে, জাতীয় সঙ্গীতের পরই মর্যাদার সঙ্গেঁ গীত হয়। সাত চল্লিশের পর থেকে ভারত পকিস্তানের মধ্যে চীর বৈরী ভাব বিদ্যমান। দু দেশের মধ্যে দুতাবাস থাকলেও দুতিয়ালি নেই। দুই দেশের মধ্যে কাস্মীর নিয়ে যুদ্ধং দেহী মনোভাব মারমার কাটকাট টান টান উত্তেজনা বিদ্যমান। ৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধ সম্প্রতিক কালে কারগিল বিরোধ দুই দেশের মধ্যে বিরোধ বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের স্বপ্নদ্রষ্টা পাকিস্তানী কবি আল্লামা স্যার মোহাম্মদ ইকবাল তাঁর কাব্য প্রতিভার গুনেও কারনে সারা ভারতে আছেন স্বমহিমায়-স্বগৌরবে। আমাদের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় হানাদার বাহিনী “নিকাল যাও, হট যাও, উৎরো ইয়াছে ছালে বাঙ্গাঁল বহুত খতরনাক হ্যায়, মুক্তিহ্যায়” বলে বাঙ্গাঁলি দেরকে ধমক ধামক গালিগালাজ করতঃ কর্কশ ব্যবহার করে উর্দূ ভাষার কিঞ্চিত মাধুর্য্য লালিত্যকে বিসর্জন দিয়েছে। গবেষনাও অনুসন্ধানে দেখাগেছে হায়দরাবাদ, লক্ষেèৗ এলাকার উর্দূ ভাসিগন সুমিষ্ট ভাষায় উর্দূতে বাতচিত করেন। “মেহেরবানী করকে জারা তসরিফ রাখিয়ে জনাব” এর বাংলা হবে মেহের বানী করে তশরিফ রাখুন। মায়ময় এই রং এর পৃথিবীর রং বেরং এর চার চিক্য লোভ মোহ প্রসঙ্গেঁ বাংলা কাব্য সাহিত্যে লোক কবি গন তাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরন ঘটিয়েছেন মরমি কবি হাছন রাজা বলেছেন “একদিন তোর হইবরে মরন-রে হাছন রাজা, বাউল স¤্রাট শাহ আব্দুল করিম বলেছেন “রং এর দুনিয়া তরে আর চাই না” লোকপ্রিয় লোক শিল্পী নুকুল কুমার বিশ্বাস গেয়ে উঠেন “সকাল সন্ধ্যা ধান্দা করে এত টাকা করছ কামাই কত টাকা সঙ্গেঁ নিবায় কাফনেরত পকেট নাই. যখন কিচ্চা খতম হইবে রে”। ক্ষনস্থায়ী পৃথিবীর খন্ড কালীন মানব জীবনের কথাও কাহিনী এই ভাবে বয়ান করেছেন, গেয়েছেন আমাদের লেখক, কবি, শিল্পী গন। তাদের রচনা আমাদের মানব জীবনকে আলোকিত আন্দোলিত করেছে, আমরা ক্ষনিকের তরে হলেও এই মাটির পৃথিবীতে খাই খাই চাই চাই মনোভাব পরিহার করে মানুষের মত মানুষ হবার চেষ্টা করতে পারি। বুক রিবিউ- আমার একটি হবি প্রিয় বিষয়। এক উসিলায় এক খানা গ্রহ্ণ আদ্যপান্ত পাঠ করতঃ গ্রহ্ণের শানেনুযুল জানতে বুঝতে হয়। বিশ্ব সাহিত্যের ক্লাশিক গ্রহ্ণ লিওটলষ্টয়ের “ওয়ার এন্ড পিস” থেকে শুরু করে বহুগ্রহ্ণ রিভিউ করেছি। আমার অদেখা অজানা উর্দূ কবি এই উর্দূ কবিতার বাংলা অনুবাদক এর নাম জানি না কবিও অনুবাদক আমাদেরকে জগত ও জীবন সমন্ধে নতুন করে ভাবতে শিক্ষাদিয়েছেন। প্রিয় পাঠক একটু ভাবুন না।

[ষাটের দশকের সাংবাদিক। মুক্তিযোদ্ধা। কবি কলামিষ্ট। সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি।]

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..