রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন
তানভীর চৌধুরী : কমলগঞ্জের গ্রাম গঞ্জের বাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমল গুলোতে জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন মার্কেটগুলোতে। কেউ কিনেছেন নিজেদের জন্য, আবার কেউ স্বজনদের জন্য সবাই কেনাকাটায় ব্যস্ত।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় কমলগঞ্জের শমশেরনগর হামিদ এন্ড কালাম ব্রাদার্স সিটি সেন্টার ষ্টেশন রোড শমশেরনগর বাজার ও চৌমুহনায় কয়েকটি মার্কেটে ঘুরে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
বেশি ভিড় দেখা গেছে শাড়ি, থ্রিপিস সহ বিভিন্ন পোশাক ও জুতার দোকানগুলোতে পিছিয়ে নেই কসমেটিকসের দোকানগুলো, তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে দোকানগুলো। মার্কেটের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
শমশেরনগর এমবি ক্লথ ষ্টোর ও বিলাস ক্লথ ষ্টোর এর মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, প্রচুর ক্রেতা আসছেন। আলহামদুলিল্লাহ ভালোই বিক্রি হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার আশাকরি ভাল বিক্রি হবে।
অধ্যক্ষ এডভোকেট বয়তুল হক চৌধুরী নামের একজন ক্রেতা বলেন, শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা করতে এলে বাজারে প্রচুর ভিড় থাকে। তাছাড়া অনেক কিছু পাওয়া যায় না। সেজন্য আগেভাগেই ঈদের কেনাকাটা করতে মার্কেটে এসেছি। তবে এখানে এসে দেখছি প্রচুর ভিড়। এই ভিড়ের মধ্যেই বাবার জন্য একটি পাঞ্জাবি কিনেছি এবং মার জন্য একটি শাড়ি কিনেছি। আমার জন্য এখনও কিছু কিনিনি। ঘুরে ঘুরে দেখছি কী কেনা যায়।
কমলগঞ্জের মুন্সিবাজারের রুমা আক্তার চৌধুরী নামের একজন ক্রেতা বলেন আমি প্রতি ঈদেই মার্কেটে এসে কাপড় কিনি, স্বামী বিদেশে থাকায় আমাকেই মার্কেটে আসতে হয় বাচ্চাদের’কে নিয়ে, বড় মেয়ের জন্য একটি থ্রিপিস এবং আমার ছেলের জন্য সাট পেন্ট কিনলাম। আমি এখনও কিছু কিনি নি, তবে আবার চাঁদ রাতে আসবো।
কমলগঞ্জের মুন্সি বাজারের একজন কাপড় বিক্রেতা জানান, শীত চলে গেছে, গরম বাড়ছে। তাই ক্রেতারাও গরমে আরামদায়ক হবে এমন পোশাক কিনছেন। ঈদ সামনে তাই তাদের বিক্রিও বেড়েছে।
আর-পি টাওয়ার এন্ড বিজনেস কমপ্লেক্স মার্কেটের বিসমিল্লাহ ক্লথ ষ্টোর এর মালিক নোমান আহমদ জানান, আলহামদুলিল্লাহ প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। ঈদে আমরা ক্রেতাদের জন্য নতুন নতুন কালেকশন নিয়ে এসেছি, ক্রেতারাও পছন্দ করছেন, দামও সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ বিক্রিও ভালো হচ্ছে।
শমশেরনগর নামিরা কালেকশন এর মালিক রাজু খান ও টিকটক ফ্যাশনের মালিক জুমেল আহমেদ চৌধুরী বলেন, পুরুষদের চাইতে মহিলা কাস্টমাররাই বেশি আসছে, শাড়িও, থ্রিপিস ভালো বিক্রি হচ্ছে। আশাকরি চাঁদরাত পর্যন্ত ভালো বিক্রি করতে পারবো।
শমশেরনগর আপন কসমেটিকস এন্ড গিফট সেন্টারের এর মালিক বলেন, আলহামদুলিল্লাহ ভালই চলছে, প্রচুর কাস্টমার আসছে, ভালই বিক্রি হচ্ছে। তবে, কিছু দোকান, মার্কেট ঘুরে তেমন ভিড় দেখা যায়নি। দোকানে ক্রেতা উপস্থিতি সন্তোষজনক নয়।
বিক্রেতারা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বিক্রি কিছুটা কম। ব্যবসায়ীরা বলেন, রোজার ঈদের জন্য আমরা সারা বছর অপেক্ষা করি। আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত বেশ ভালই সাড়া পাচ্ছি, যত দিন যাচ্ছে দোকানে ভিড় ভাড়ছে, আশাকরি, ঈদের আগপর্যন্ত ভালই বিক্রি হবে।
এদিকে ঈদ বাজারকে নির্বিঘ্নে করতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি তদন্ত শামীম আকঞ্জি জানান, দশ রমজানের পর থেকেই উপজেলার প্রতিটি মার্কেট ও বিপনি বিতান গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা নজরদারি রাখছে। কোন প্রকার সমস্যা যাতে না হয় সেদিকে কমলগঞ্জ থানা পুলিশের নজর রয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন বলেন, ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা যাতে করে অতিরিক্ত দাম না রাখতে পারে সেদিকে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের নজরদারী রয়েছে।